নীলফামারীর ডিমলায় শান্তিরক্ষী জাহাঙ্গীর আলমের দাফন সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৭ পিএম, ১৫ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:২০ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তি রক্ষায় নিয়োজিত সেনা সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের লাশ শনিবার দুপুর ১টায় ডিমলায় নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুপর ১১টা ১৫ মিনিটে ডিমলায় বিন্নারাণী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। এসময় হেলিকপ্টারে আসেন জাহাঙ্গীর যে ক্যাম্পে ছিলেন সে ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ, ক্যাপ্টেন তানজিদ, জেসিও আকতার, সার্জেন্ট মাহফুজার, সার্জেন্ট মাসুদসহ অন্যান্নরা।
লাশ নামানোর পর তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তার নিজ বাড়ী দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামে। সেখানে এক হৃদয় বিদারক ঘটনার সৃষ্ট হয়। পুরো এলাকার মানুষ শোকে ভেঙ্গে পড়ে। সেখানে গ্রামের মসজিদ প্রাঙ্গনে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষসহ নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার, ডিমলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লাইসুর রহমানসহ স্থানীয় বিভিন্ন স্তরের মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এরপর দাফন সম্পন্ন হয়। দাফন শেষে তপোধ্বনী ও গার্ড অব অর্নার দেয়া হয়।
জাহাঙ্গীর আলম নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের লতিফুর রহমানের ছেলে। জাহাঙ্গীর ৫ ভাইয়ের মধ্যে চতুর্থ ছিল।
এদিকে লাশ বাড়ীতে আসার পর জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শিমু আকতার যেন বাকরুব্ধ হয়ে পড়েন। জাহাঙ্গীরের মৃত্যুতে বড় ভাই আবুজার রহমানসহ বাবা-মাসহ পরিবারের সকলেই মূর্ষে পড়েছেন।
উল্লেখ্য জাহাঙ্গীর আলম ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারী সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ২০২১ সালের ১২ এপ্রিল জাহাঙ্গীর আলম পার্শ্ববতী জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের রশিদপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে শিমু আকতারকে বিয়ে করেন। ওই বছরই ৭ ডিসেম্বর ৬১ ব্যটলিয়ানের সহযোগিতায় মধ্র আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে শান্তি মিশনে যান। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরে তার দেশে ফিরে আসা কথা ছিল।
উল্লেখ্য মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের পশ্চিম সেক্টরে বোয়ার এলাকায় মোতায়েন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ান (ব্যানব্যাট-৮) ২০২১ সালের ০৯ নভেম্বর থেকে বিস্তীর্ণ এলাকা জুরে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন। দূর্গম এলাকায় মোতায়েন অন্যতম অস্থায়ী ক্যাম্প কুই হতে পরিচালিত যান্ত্রিক টহলের একটি দল মেজর আশরাফের নেতৃত্বে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কাইতা এলাকায় টহলে যায়। বাংলাদেশ সময় রাতে প্রত্যাবর্তনের পথে টহল কমান্ডার মেজর আশরাফকে বহনকারী প্রথম গাড়িটি মাটিতে পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে গাড়িটি প্রায় ১৫ ফিট দূরত্বে ছিটকে পড়ে। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলেই সৈনিক জাহাঙ্গীরসহ তার অপর দুই সাথী সৈনিক শরিফ ও সৈনিক জসিম গুরুতর আহত হয়।
দূর্ঘটনার পর পরই আহত শান্তিরক্ষীদের উদ্ধার করে জরুরী ভিত্তিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন দপ্তরের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুততার সাথে ১৪৪ কিমি: দূরে বোয়ারে অবস্থিত মিনুসকা নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে।