বগুড়ায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জাকির প্রতারক চক্রের হাত থেকে পালাতে গিয়ে খুন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৮ পিএম, ৮ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:১৪ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
বগুড়ায় প্রতারক চক্রের খপ্পর থেকে পালাতে গিয়ে খুন হন অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য জাকির হোসেন। এই ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহত চাকুসহ দুইজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা হলেন, মৃত রেজাউল করিম মিলনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ওরফে আশা (২৪) ও শহিদুল ইসলাম খোকনের ছেলে মোস্তফা কামাল ওরফে কমল (২৫)। তারা উভয়ে শাজাহানপুরের কৈ-গাড়ী পূর্বপাড়া এলাকার বাসীন্দা।
আজ শনিবার জেলার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আলী হায়দার চৌধুরি এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুইজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
এসময় গ্রেপ্তাররা জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তুলে দীর্ঘদিন যাবত তাদের নারী সদস্যদের দিয়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যাক্তিদের টার্গেট করতেন। নানা উপায়ের ওই ব্যক্তিদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে নারী সদস্যদের দিয়ে ভুক্তভোগীদের একটি বাসাবাড়িতে ডেকে নিতেন। এরপর ওই ব্যক্তির সাথে চক্রটির নারী সদস্যর ঘনিষ্ট হওয়ার আপত্তিকর ছবি তুলে ভয়ভিতী দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন। অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য জাকিরকেও ঠিক একই কায়দায় ফাঁদে ফেলে চক্রের নারী সদস্য আখি (ছদ্মনাম) ও সালমা (ছদ্মনাম) কৈ-গাড়ী জবান স্কুলের পাশের একটি ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। এরপর নারী সদস্যরা কৌশলে অনান্য সহযোগীদের মুঠোফোনে মিসডকল দিয়ে ভেতর যাওয়ার সিগনাল দেয়। গ্রেপ্তার দুইজনসহ চক্রের অন্য সদস্যরা এসময় বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে জাকিরকে আটক করে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগ তুলে হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা জাকিরের কাছে থাকা নগদ ২ হাজার ৩০০ ও ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে উঠিয়ে নেয়।এরমধ্যে জাকির সুযোগ বুঝে ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালানোরর চেষ্টা করলে গ্রেপ্তাত আশরাফুল তাকে ধাওয়া করে ছুরিকাঘাত করেন। এসময় চক্রের সদস্যরা অবস্থা বেগতিক দেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।পরে স্থানীয়রা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাকিরকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসা মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আলী হায়দার চৌধুরী আরও জানান, খুন হওয়া জাকিরের ব্যবহত মুঠোফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে আসামীদের শনাক্ত করা হয়। এই ঘটনায় তার স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে শাজাহানপুরে মামলা দায়ের করেছেন। জাকির হত্যায় প্রতারক এই চক্রটির ৮ সদস্য সরাসরি জড়িত আছেন। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তার আশরাফুলের বিরুদ্ধে এরআগেও অস্ত্র আইনে ১টি মামলা চলমান আছে। গ্রেপ্তার দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে। জেলা পুলিশের এই সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ, শাজাহানপুর থানা পুলিশের ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জেলা ডিবি পুলিশের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) সাইহান ওলিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।