কুষ্টিয়ার খাজানগরে সৎ বাবা কর্তৃক কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫৯ পিএম, ২১ আগস্ট,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০৩ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের খাজানগর উত্তরপাড়ায় সৎ বাবা তোতা (৪৫) এর বিরুদ্ধে কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গত ১৬ আগষ্ট দিবাগত রাতে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা যায়।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে হযরত নামের এক ব্যক্তি। পেশায় তিনি ড্রাইভার হলেও এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন হযরত মূলত মাদক ব্যবসায়ী। তিনি নিজেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তাছাড়া এই হযরতের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন মানুষের অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী কিশোরীর মা জানান, বড় মেয়ে সন্তান সম্ভাবা হওয়ায় তার বাচ্চা ভেলিভারি করানোর জন্য গত ১৪ আগষ্ট মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনিও মেয়ের দেখাশোনা করার জন্য কয়েকদিন হাসপাতালেই ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি মেয়ে নাতিন সহ বাড়িতে ফিরে জানতে পারেন তার বর্তমান স্বামী তোতা তার মেঝ মেয়েকে ১৬ তারিখ দিবাগত রাতে ধর্ষণ করেন। বাড়িতে কেউ না থাকায় সে এই ন্যাক্কারজনক কাজটি করার সুযোগ পেয়েছে। এরপর থেকেই তার বর্তমান স্বামী তোতার থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পরে হযরত ড্রাইভার। সবশেষ রবিবার সকালে হযরত ড্রাইভার তাদের বাড়িতে গিয়ে ভুক্তভোগী, ভুক্তভোগীর মা ও সদ্য সন্তান প্রসব করা বোনকে তাদের ব্যবহারের জিনিসপত্র নিয়ে এলাকা ত্যাগ করার জন্য হুমকি ধামকি দেন। আর এলাকা না ছেড়ে গেলে তাদেরকে বড় বিপদে পড়তে হবে বলেও হুমকি দেন হযরত।
কিশোরীর মা আরো জানান, তার মেয়ে জানিয়েছে- গত ৬ মাস পূর্বে তোতা আরো একবার এই ন্যাক্কারজনক কাজ করেছিল। তখন তোতা ঐ মেয়েকে বলেছিল- "বিষয়টি কাউকে জানালে তোর মাকে হত্যা করা হবে।" সেসময় মায়ের জীবনের ভয়ে থেমে গেলেও দ্বিতীয় বার সে ভূল না করে তাকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়। এখন তারা ন্যায় বিচার পেতে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হয়েছেন।
সরেজমিনে সংবাদ সংগ্রহকালে ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে তার বড় বোনের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়। সেসময় ভুক্তভোগীর বড় বোন জানান, হযরত বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। বরিবার সকালে হযরত তাদেরকে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে বলছে। তাছাড়া এই হযরত তাদেরকে বলেছে - " তারা নাকি মোটা টাকা হাতিয়ে নিতে ধর্ষণের মিথ্যা নাটক করছে"। ঐ ভুক্তভোগী কিশোরীর বড় বোন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরো বলেন, "কেউ কি তার বোনের সম্ভ্রম টাকার কাছে বিক্রি করে? আমি ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠিন শাস্তি চাই।" এই বলেও কান্নায় ভেঙে পড়েন ঐ সদ্য সন্তান প্রসব করা অসুস্থ নারী। সে সময় উপস্থিত হযরত এর সামনে তার বিরুদ্ধে বলায় ক্ষিপ্ত ও চড়াও হন তিনি। তাছাড়া হযরত তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে অভিযুক্ত তোতা পলাতক থাকায় এবং তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন খাঁন'র সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি জানান, এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে। ভূক্তভোগীদের ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য যা যা করার তাই তাই করা হবে বলেও জানান এই চৌকস অফিসার।