মৃত ব্যক্তি-প্রবাসীর নামে টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড, কাউন্সিলরকে শোকজ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৬ পিএম, ২৩ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৩৯ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর শেফালী খাতুনের বিরুদ্ধে। পরিবারপ্রতি একটি ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ থাকলেও একাধিক সচ্ছল ব্যক্তির নামে দুটি করে ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ফ্যামিলি কার্ড পেয়েছেন মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীরাও। আবার একই পরিবারের তিনজনকেও দেয়া হয়েছে ওই কার্ড। প্রতিটি ফ্যামিলি কার্ডে সংরক্ষিত ওই নারী কাউন্সিলরের সই ও সিলমোহর রয়েছে। বুধবার (২২ জুন) রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে চুয়াডাঙ্গা শহরজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় নারী কাউন্সিলর শেফালী খাতুনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোরস্থান পাড়ার রবিসন খাতুন। তিনমাস আগে তিনি মারা গেলেও তার নামে দেয়া হয়েছে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড। মৃত রবিসনের নামে এর আগেও দুইবার টিসিবির পণ্য কেনা হয়েছে।
একই ওয়ার্ডের গোরস্থান পাড়ার মোতাহার হোসেন, তার দুই ছেলে সৈয়দ মো. পারভেজ হোসেন ও সৈয়দ মো. মুরাদ হোসেনকে ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকের রয়েছে দুটি করে কার্ড। যার মধ্যে সৈয়ম মো. মুরাদ হোসেনের (তিনি গত ৫-৬ বছর ধরে কুয়েতে অবস্থান করছেন) নতুন ও পুরাতন ছবি দিয়ে ফ্যামিলি কার্ড করে দেয়া হয়েছে। পারভেজ হোসেনের একটি কার্ডে ছবি থাকলেও আরেকটি কার্ড ছবি ছাড়া। একটি কার্ডের সঙ্গে আরেকটি কার্ডের মোবাইল নম্বর একই দেয়া হয়েছে। একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাসনা জাহানের নামেও দুটি ফ্যামিলি কার্ড পাওয়া গেছে। কার্ডে দেয়া মোবাইল নম্বর একই। তবে, দুই কার্ডে ব্যবহার করা হয়েছে দুই রকম ছবি। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোছা. তাহমিনা খাতুনের নামেও একই রকম ছবি সংযুক্ত দুটি ফ্যামিলি কার্ড পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, যেসব ব্যক্তিদের নামে ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তারা আগেও টিসিবির পণ্য কিনেছেন বলে জানা গেছে। প্রতিটি ফ্যামিলি কার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শেফালী খাতুনের সই ও সিলমোহর রয়েছে। জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শেফালী খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমি ওই ধরনের কাজ করিনি। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর শেফালী খাতুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। আমি তাকে তলব করেছিলাম। কার্ডগুলো আলাদা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সকালে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তার কাউন্সিলর পদ বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হবে।