সরিষাবাড়ীতে বন্যায় ৪০ গ্রাম প্লাবিত, ১২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২৯ পিএম, ২০ জুন,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০২:৫৫ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং প্রচন্ড বৃষ্টিতে যমুনা, ঝিনাই ও সুবর্ণখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে ১২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তলিয়ে গেছে প্রায় ৩’শ হেক্টর পাট, রোপা-আমন বীজতলা, মরিচ, শাক সবজির ফসলী জমি।
আজ সোমবার (২০ জুন) পর্যন্ত ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
ভারী বর্ষণে শিশুরা-বাঘমারা ব্রীজের সংযোগ সড়ক আবারও ভাঙনের কবলে পড়েছে। যমুনা নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৭ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানাগেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার বন্যা কবলিত সাতপোয়া, ভাটারা, কামরাবাদ, আওনা ও পিংনা ইউনিয়নে বন্যার পানি প্রবেশ করায় পাট ২’শ হেক্টর, আউস ধান ২৫ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১০ হেক্টর, শাক সবজী ২৫ হেক্টর, মরিচ ৫ হেক্টর ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। উপজেলার ১৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপির শাসনামলে ২০০৩ ইং সালে ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের ধানাটা-জামিরা রাস্তায় ঝিনাই নদীর ওপর শিশুয়া-বাঘমারা সেতু'নির্মাণ করা হয়। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে শিশুরা-বাঘমারা ব্রীজের সংযোগ সড়ক আবারও ভাঙনের কবলে পড়েছে। কয়েক বছর যাবৎ ব্রিজটির সংযোগ সড়ক ভাঙ্গনের কবলে পড়লেও সংস্কারের জন্য সরকারী বরাদ্ধ হরিলুট হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
সংযোগ সড়ক ভাঙ্গনের ফলে উপজেলা সদরের সঙ্গে সাতপোয়া ইউনিয়নের শিশুয়া, বাঘমারা, ছাতারিয়া, আদ্রা, রৌহা, জামিরা, নান্দিনা, চুনিয়াপটল, দাসেরবাড়ী এবং মাদারগঞ্জ ও কাজিপুরের শালদহ, বামুনজানি, কয়ড়া, শ্যামগঞ্জ, আদারভিটা, শালগ্রামসহ অন্তত ২০ গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। তবে মাটি ফেলে ওই সেতুর সংযোগ সড়ক শুধু রিক্সা-ভ্যান চলাচলের উপযোগী করে মেরামতের কাজ করা হচ্ছে বলে জানাগেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর জানান, বন্যায় ১৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৫০ মে: টনচাল ও নগদ ১ লক্ষ টাকা সরকারী বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসাার নাহিদা ইয়াসমিন জানান, এ পর্যন্ত ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠার কারণে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা জানান, জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে চাল ও নগদ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দূর্গত এলাকার চেয়ারম্যানের নিকট হইতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে বরাদ্দকৃত অর্থ ও চাল বিতরণ করা হবে । সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে