সিলেটে আশ্রয়কেন্দ্রে অভুক্ত মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৯ পিএম, ১৯ জুন,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:০৩ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
দিনে দিনে কাতর হয়ে পড়ছেন সিলেটের বানভাসি মানুষ। চরম দুর্দিন কাটছে তাদের। খোদ সিলেট নগরীর আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অভুক্ত রয়েছে মানুষজন। দিনে এক বেলাও তাদের খাবার জুটছে না। দেখা মিলছে না জনপ্রতিনিধিদেরও। এখনো পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে ব্যস্ত থাকার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। নগরীর শেখঘাটের ময়নুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের দুটি ভবনে বসবাস করছে অর্ধশতাধিক পরিবার। নগরের শেখঘাট, কুয়ারপাড়, বিলপাড়সহ কয়েকটি এলাকা থেকে বাড়িঘর ছেড়ে এসে লোকজন উঠেছেন এই কেন্দ্রে। অনেকটা গাদাগাদি করে বসবাস করছেন লোকজন।
আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা কুয়ারপাড়ের তসলিমা বেগম জানিয়েছেন, গত দুদিন ধরে তারা অবস্থান করছেন। আশপাশের লোকজন রান্না করা খাবার কখনো দিচ্ছেন, কখনো দিচ্ছেন না। দিনে এক বেলাও তারা খাবার পাচ্ছেন না। প্রশাসনের কেউ এসে ত্রাণ দেয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। আব্দুস শুকুর নামের আরো এক বন্যার্ত জানান, তার ঘরে কোমর পানি। স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন। আজ সকালে এসে কয়েকটি পরিবার নতুন করে উঠেছে। শেখঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘাষিটুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শনকালে এমন চিত্রই চোখে পড়ে।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররা জানিয়েছেন, কিছু কিছু আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। এখনো সরকার থেকে পর্যাপ্ত ত্রাণ আসেনি। তবে রান্না করা খাবার পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিলেট নগরীতেই অর্ধশতাধিক আশ্রয় কেন্দ্র। ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক আহমদ ও ১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিকন্দর আলী জানান, আশ্রয় কেন্দ্রেও মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না। পানিবন্দি লোকজনও জীবন বাঁচাতে এখন আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছেন। ফলে আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজনের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। নগরের বাইরে সিলেট জেলায় সাড়ে ৪শ আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বন্যার্তরা। দুশ্চিন্তা কাটছে না তাদের। অনেক আশ্রয় কেন্দ্রে গবাদিপশু ও মানুষ এক সঙ্গে বসবাস করছে। উজানের ঢল অব্যাহত থাকার কারণে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়া যাচ্ছে না।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান জানিয়েছেন, আমরা সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রে শুকনো খাবার পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করছি। থানা এবং জেলা পুলিশের সদস্যরা নৌকাযোগে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে খাবার পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করছেন। সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বন্যা কবলিত এলাকায় কাজ করছেন বলে জানান তিনি। সেনাবাহিনীর তরফ থেকে উদ্ধার কাজ পরিচালনার পাশাপাশি শুকনো খাবার ও ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণে সিলেটে এসেছেন সেনা প্রধান এসএম শফি উদ্দিন আহমদ। তিনি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে রয়েছেন।