টঙ্গীতে একদিনে ধর্ষণের ৪ মামলায় আ’লীগ নেতা ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ গ্রেফতার ৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৯ পিএম, ৩ জুন,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০১ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
নিজের শ্যালিকা শ্রমিকলীগ নেত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় আজ শুক্রবার গ্রেফতার হয়েছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড (এরশাদ নগর) কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ। একই দিন আরো পৃথক ৩টি ধর্ষণ মামলায় দুই সহোদরসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে জুমা নামাজে শরিক হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কাউন্সিলর ফারুক আহমেদ। এসময় শালির (স্ত্রীর খালাতো বোন) অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ। শালীকে দলীয় পদ দেওয়ার প্রলোভনে বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলে থানায় অভিযোগ করা হয়। তবে স্বজনদের দাবী, ফারুক পারিবারিক ও দলীয় বিরোধের জেরে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। আসন্ন সিটি নির্বাচনে দলের প্রতিপক্ষ খালি মাঠে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে শ্যালিকাকে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।
এব্যাপারে মামলার বাদীর বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বাদীর ভিজিটিং কার্ডে দেখা যায়, তিনি মহিলা শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং টঙ্গী আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
অপরদিকে টঙ্গী পূর্ব থানাধীন পাগাড় পাঠান পাড়ায় ভাড়াটিয়া গৃহবধুকে ধর্ষণের অভিযোগে বাড়ির মালিকের দুই ভাগিনা জাহিদুল ইসলাম (২৫) ও সহোদর জান্নাতুল ফেরদৌসকে (২২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই দিন স্থানীয় আরিচপুর মধুমিতা বেলতলা রোডের একটি বাড়িতে বিধবাকে ধর্ষণের অভিযোগে সিয়াদ নামের অপর যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধর্ষণের শিকার পাগাড় পাঠান পাড়ার ওই নারীর অভিযোগ, গত ২৫ মে বিকেল ৩টায় তিনি বাথরুমে গোসল করছিলেন। এসময় বাড়ির মালিক জহিরুলের ভাগিনা জাহিদুল গোপনে গোসলের ভিডিও ধারণ করেন। ঘটনার সময় তার স্বামী কর্মস্থলে ছিলেন। পরবর্তীতে এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এরই মধ্যে একদিন এই অনৈতিক কাজের দৃশ্য জাহিদুলের ছোট ভাই জান্নাতুল ফেরদৌস দেখে ফেলে। পরে এ ঘটনা তার স্বামীকে জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৩১ মে রাত ৯টায় ফেরদৌসও তাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে তিনি পৃথক দুটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
অপর ঘটনায় ধর্ষণের শিকার বিধবা একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন এবং তার তিন বছরের ইয়াতিম কন্যা সন্তানকে নিয়ে স্থানীয় পূর্ব আরিচপুর মধুমিতা বেলতলা রোডের খোকনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ওই এলাকার বখাটে যুবক সিয়াদ বিয়ের প্রলোভনে ওই যুবতী বিধবার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। গত ১ জুন রাত ১১ টায় ওই বিধবা যুবতীকে ভুল বুঝিয়ে স্থানীয় বেলতলা বস্তিতে সিয়াদের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে বিয়ের আশ্বাসে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিধবা যুবতীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শণ করে।
যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদ মাসুদ বলেন, এসব ঘটনায় পৃথক ৪টি মামলা হয়েছে। নির্যাতিতাদের ডাক্তারী পরিক্ষার জন্য হাসপাতালে এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।