যুবলীগ নেতার তথ্যে অপহরণের সাড়ে ৩ মাস পর যুবকের লাশ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ২ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:০৯ এএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের দেওয়া তথ্যে অপহরনের ৩ মাস ২০ দিন পর শহিদুল ইসলাম শালু মিয়ার (৩৫) হাত-পাঁ বাঁধা বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার (২জুন) বিকেলে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বাঘেরহাট তেকানি গ্রামের জিঞ্জিরাম নদীর পাড় থেকে নিহত ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত যুবক উপজেলার দাঁভাঙ্গা ইউনিয়নের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে শহিদুল ইসলাম শালু মিয়া (৩৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১১ ফেব্রয়ারি রাতে শহিদুল ইসলাম শালু মিয়াকে (৩৫) অপহরণ করা হয়। পরে ২৯ এপ্রিল স্বামী শালু মিয়াকে অপহরণের অভিযোগ এনে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি জাকির হোসেন, ওই এলাকার খয়বর আলীসহ অজ্ঞাত আরও তিন জনকে আসামি করে রৌমারী থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন স্ত্রী রেজেকা খাতুন।
এ ঘটনায় গত ৩০ মে ওই যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনকে ঢাকায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য মতে, ঢাকায় অভিযান চালিয়ে এঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে খয়বর আলী ও জিয়াউর রহমান জিয়াকে গ্রেপ্তার করে রৌমারী থানায় নেয় পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তিতে এবং সরেজমিনে গিয়ে জিঞ্জিরাম নদীর পাড় থেকে পুঁতে রাখা হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি অবস্থায় শহিদুল ইসলাম শালু মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারতারা হলেন, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের পূর্বকাউয়ারচর গ্রামের সোহরাব আলীর ছেলে জাকির হোসেন, একই ইউনিয়নের ঝগড়ারচর গ্রামের ছলে হকের ছেলে খয়বর আলী (৩২), কাউয়ারচর গ্রামের তালেব মিয়ার ছেলে জিয়াউর রহমান জিয়া (৫০) ।
হত্যার শিকার শালু মিয়ার স্ত্রী রেজেকা খাতুন বলেন, স্বামী শহিদুল ইসলাম শালু মিয়ার সাথে দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য, যুবলীগ নেতা জাকির হোসেনের ব্যবসায়িক বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাকির হোসেন তার স্বামীকে মোবাইল ফোনে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের স্লুইটগেট এলাকায় ডেকে নেন ওই ইউপি সদস্য। সেখানে গিয়ে দেখেন ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, খয়বর আলীসহ অজ্ঞাত আরও দুই তিন জন অবস্থান করছেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা তার স্বামীকে জোর করে তুলে নিয়ে যান। এরপর থেকে তার আর খোঁজ না পেয়ে থানায় একটি অপহরণের মামলা করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে এরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
রৌমারী থানায় ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, হত্যাকান্ডের শিকার ওই যুবকের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে ৩০ মে মামলার প্রধান আসামী ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরে তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তার দেওয়া তথ্যে ঢাকায় অভিযান চালিয়ে অপর দুই সহযোগিকে গ্রেপ্তার করা হয়। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা পরে জানানো হবে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।