কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়ল স্কুলের শৌচাগার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৫২ পিএম, ২ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:১৪ এএম, ২৭ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ফেনীর পৌরসভার চাঁড়িপুরে একটি স্কুলের শৌচাগার নিম্নমানের কাজ করায় নির্মাণের ৫দিন পর ধ্বসে পড়েছে ছাদ। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও দৌড়ে প্রাণে রক্ষা পেলেন নির্মাণ শ্রমিকরা।
ধ্বসে পড়ার খবর পেয়ে বুধবার বিকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ফেনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল হক ও সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী হাসান পারভেজ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ফেনী পৌরসভার পশ্চিম চাঁড়িপুর কাজী হরমুজা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়।
ফেনী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তর ঠিকাদার নিয়োগ দেয় স্বপনকে। স্বপন মার্চ মাস থেকে ২ তলা বিশিষ্ট বাথরুম নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ২ তলা বিশিষ্ট বাথরুমের দৈর্ঘ্য ১৪ ইঞ্চি ও প্রস্থ সাড়ে ১৩ ইঞ্চি। নিচ তলায় তিনটি বাথরুম ও ২য় তলায় চারটি বাথরুম নির্মাণ করা হয়।
টেকসই শৌচাগার নির্মাণ করার জন্য সরকারিভাবে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও টাকা বাঁচাতে ঠিকাদার নামমাত্রা সিমেন্ট ও ব্যবহার করার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। রুমগুলোর ছাদ ঢালাইয়ের ৫ দিন পর ছাদ ধ্বসে পড়ে।
এ বিষয়ের একটি ভিড়িও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। ছাদ ঢালাইয়ের কাজে কম রড় ও নামমাত্রা সিমেন্ট ব্যবহার করার কারণে ধ্বসে পড়ছে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীরা।
প্রকল্পের এক নির্মাণ শ্রমিক জানান, এখানে পেটের দায়ে কাজ করতে এসে জীবনের ঝুঁকির মধ্যে আছি। কারণ এখানে কাজের কোনো মান নেই। যেকোনো সময় অন্য ছাদও এভাবে ধ্বসে পড়ে সেই ভয়ের মধ্যে আছি।
স্থানীয় এলাকাবাসী আবদুল আউয়াল সুজন জানান, তারা সরকারের উন্নয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এভাবে এমন কাজ করছে। ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হলেও ৪-৫ লাখ টাকার মধ্যে কাজ শেষ করে বাকি টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে। আমরা বার বার বাধা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাদের অবহেলার কারণে অনেক ছাত্র-ছাত্রী মারা যেত। সুষ্ঠভাবে তদন্ত করে তাদের বিচারে দারি করেন এলাকাবাসী।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক রাবেয়া সুলতানা বলেন, নিম্নমানের কাজ করার কারণে ছাদ ধ্বসে পড়েছে। আমরা একাধিকবার কাজে বাধা দিয়েছি এবং অফিসকে জানিয়েছি তারা কর্ণপাত করেনি। ঠিকাদার ও নির্মাণ শ্রমিকের অবহেলার কারণে ছাদ ধ্বসে পড়েছে। তাদের এ সব অনিয়মের কারণে সরকারের লাখ লাখ সুফল থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।
ঠিকাদার সূত্র জানায়, মোট বরাদ্দের ৫০ শতাংশ টাকা অগ্রিম অফিস ও নেতাদেরকে দিয়ে দিতে হয়েছে। বাকি টাকা দিয়ে কোয়ালিটি কাজ করা যায় না। ফেনী জেলার সকল উন্নয়ন কাজ এমন নিয়মে হচ্ছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী মো, শফিউল হক বলেন, ছাদ ধ্বসে পড়ার কারণে পুরোটাই ভেঙে করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বাথরুমের ১ম তলার ছাদ ভেঙে ফেলা হয়েছে। ছাদে রড় কম দেওয়ার কারণে ধ্বসে পড়ছে বলে তিনি মনে করেন।