পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় মা-ছেলেকে : র্যাব-১৪
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২২ পিএম, ২৫ মে,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ১২:১৯ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যা করা হয় মা হাফসা আক্তার হারেনা (২৭) ও তার পাচঁ মাস বয়সের শিশু সন্তান হাবিবকে। চাঞ্চল্যকর এঘটনার পর ছায়া তদন্ত এবং আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায় র্যাব-১৪ এর একটি আভিযানিক দল। পরে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ডের মূলপরিকল্পনাকারিসহ দু’জনকে আটক করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত হাফসা আক্তার হারেনার উকিল বাবা উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের ওকড়াকান্দাগ্রামের গোলাম শহিদের ছেলে জাকির হোসেন ওরফে জফিয়াল (২৮) ও নিহতের দেবর একই এলাকার মৃত বাহাদুরের ছেলে চাঁন মিয়া (৪৩)।
এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে রৌমারী অফিসার্স ক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন জামালপুর র্যাব-১৪, সিপিসি-১।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুরের কোম্পানি কমান্ডর স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান বলেন, ঘটনাটি নিয়ে মিডিয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে রোববার (২২ মে) নিহত হাফসা আক্তার হারেনার বাবা হারুনর রশিদ বাদি হয়ে রৌমারী থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর র্যাবের জামালপুর ক্যাম্পের প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালান। পরে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামীদের চিহ্নিত করে অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুর ২টার দিকে র্যাবের একটি আভিযানিক দল জামালপুরের বকশীগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামী জাকির হোসেন ওরফে জফিয়ালকে আটক করেন। তার দেওয়া তথ্য মতে, রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে এ হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত প্রধান অভিযুক্ত নিহত হারেনার দেবর চাঁন মিয়াকে আটক করা হয়।
কোম্পানি কমান্ডর আশিক উজ্জামান আরও বলেন, ঘটনার দিন ভিকটিম হাফসা আক্তার হারেনা তার অসুস্থ ছেলে হাবিবের চিকিৎসা শেষে কুড়িগ্রাম হতে বাড়ি ফেরার পথে রৌমারী বাজার হতে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও একটি ফ্লাক্স কিনে শ্বশুর বাড়িতে যান। সেখান থেকে ছেলেকে নিয়ে তার বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে নির্জন এলাকায় পৌঁছলে আগ থেকে ওঁৎপেতে থাকা আসামীরা ভিকটিম হাফসা আক্তার হারেনা এবং তার শিশু সন্তানকে জোরপূর্বক রৌমারী সদর ইউনিয়নের নতুনবন্দর গ্রামের জনৈক আব্দুর সবুর মিয়ার পুকুরের পূর্বপাড়ে নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যা করে। পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। পরে আটক আসামীদেরকে রৌমারী থানায় হস্তান্তর করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডর এএসপি এমএম সবুজ রানা। এছাড়াও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া কর্মীরা এসময় উপস্থি ছিলেন।
র্যাবের হাতে আটক ওই দুই আসামীকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন রৌমারী থানার ওসি মোন্তাছের বিল্লাহ।
প্রসঙ্গত, (২১ মে ) শনিবার সকালে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুনবন্দর নামক এলাকায় বাবার বাড়ির এক প্রতিবেশীর পুকুরের কিনারায় গলা কাটা মুমূর্ষূ অবস্থায় হাফসা আক্তার হারেনা ও ওই পুকুরের পাশে ধান ক্ষেতে তার পাঁচ মাস বয়সের শিশু সন্তান হাবিবের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়। এঘটনায় নিহত হারেনার বাবা বাদি হয়ে রৌমারী থানায় অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর চার দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোনো আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি।
নিহতরা হলেন, উপজেলার সদর ইউনিয়নের নতুনবন্দর গ্রামের হারুনর রশিদের মেয়ে হাফনা আক্তার হারেনা ও নাতি আহসান হাবিব।