টাওয়ার থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করলো চেয়ারম্যান পুত্রের খুনি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৭ পিএম, ১৯ মে,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৫৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ফরিদপুরের সদরপুরে বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে ঢেউখালী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতির ৮ বছর বয়সী শিশু পুত্র রাফসান বয়াতিকে হত্যাকারী এরশাদ মোল্যা (৩৫) আত্মহত্যা করেছে।
গতকাল বুধবার সন্ধা সোয়া ৭টার দিকে সদরপুর টিএন্ডটি ফোনের টাওয়ার থেকে লাফিয়ে সে আত্মহত্যা করে।
এর আগে বুধবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতির বাড়িতে ঢুকে সে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাফসানকে হত্যা করে। এ ঘটনায় আহত হন রাফসানের মা দিলজাহান রত্না (৩৯)। তাকে মূমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাফসানকে হত্যা ও তার মা রত্নাকে জখম করে বুধবার সন্ধা পৌনে ৭টার দিকে অভিযুক্ত এরশাদ মোল্যা (৩৫) সদরপুরে টিএন্ডটি টাওয়ারের উপরে চড়ে বসে। এসময় তাপকে দেখতে পেয়ে জনতা তাকে লাফ না দিতে অনুরোধও করে। তারা বিষয়টি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকেও জানায়। তবে পুলিশ আসার আগেই সন্ধা সোয়া ৭টার দিকে এরশাদ মোল্যা টাওয়ার থেকে লাফ দেয়। এরপর নিচে পড়ে সে মারা যায়।
খবর পেয়ে সদরপুর থানার এসআই কৃষ্ণের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে পৌছে। এসআই কৃষ্ণ জানান, তারা টাওয়ার থেকে লাফিয়ে পড়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠাচ্ছেন। তবে এটি কার লাশ সেব্যাপারে তিনি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি।
জানা গেছে, ঢেউখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান বয়াতি সদরপুর উপজেলা সদরে পোস্ট অফিসের পাশে তার নিজস্ব একটি বাসভবনে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। গতকাল বুধবার দুপুর পৌনে চারটার দিকে তার বাড়ির পাশের একজন মহিলা তার স্ত্রীর আর্ত চিৎকার শুনে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে দেখেন। এসময় তার চিৎকারে পাশের দোকানী ও লোকজনেরা ছুটে এসে পাশে রাফসানের রক্তাত্ত লাশ দেখতে পান।
এসময় স্থানীয়রা তাকে দ্রুত তাকে মূমূর্ষ অবস্থায় প্রথমে সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সেখান থেকে তাকে ফরিদপুরের বিএসএমএমসি হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত দিলজাহান রত্না বলেন, ঢেউখালীর সানু মোল্যার পুত্র এরশাদ মোল্যা (৩৫) এ হামলা করেছে। কেনো কি কারণে এ হামলা ও হত্যাকান্ড সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত।
স্থানীয়রা জানান, তিনদিন আগে ঢেউখালী ইউপি পরিষদে একটি বিষয় নিয়ে সালিশ হয়। ওই সালিশে দোষি সাব্যস্ত হয়ে এ হামলা করে এরশাদ। এব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত। খবর পেয়ে সদরপুর থানার এসআই রেজাউলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছে। ঘটনার সময় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তার বক্তব্য জানার জন্য মোবাইলে ফোন করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার সময় তার স্ত্রী ও পুত্র ওই বাড়িতে ছিলেন। হামলাকারী তাদের দুজনকেই কুপিয়ে জখম করার পর শিশু রাফসান ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, দুর্বিত্তরা কুপিয়ে জখম করায় ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে রাফসান ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনায় আতহ হয়েছে ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান। তাকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কি কারণে এই হত্যাকান্ড তা জানাযায়নি।
সদরপুর থানা ওসি সুব্রত গোলদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তারা এ ঘটনা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে এই ঘটনার পর ঢেউখালীতে উত্তেজিত জনতা সানু মোল্যার বাড়িঘড়ে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয় বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে রওনা হয়।