আসামি ধরতে গিয়ে পুলিশের লাথি-মারধর, অন্তস্বত্ত্বা নারী হাসপাতালে!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৫ পিএম, ১২ মে,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:১৬ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে গরু চুরি মামলার আসামি ধরতে গিয়ে রিপা আক্তার (২৫) নামে চার মাসের অন্তস্বত্ত্বা এক নারীকে পেটে-পিঠে লাথি মেরে আহত করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম এমদাদ হোসেন। তিনি গৌরীপুর থানায় উপ-পরিদর্শক (এস.আই) পদে কর্মরত।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহত রিপা আক্তার গ্রেফতারকৃত গরু চুরি মামলার আসামি আবুল হাসেমের স্ত্রী। সে স্থানীয় আবুল বাসার লিটনের ছেলে।
ভুক্তভোগী ওই নারীর শশুড় আবুল বাশার লিটন বলেন, আমার ছেলেকে পুলিশ ধরতে পুত্রবধু পুলিশের পা ধরে বলে ভাত খাওয়া শেষ হলে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। এসময় দারগা এমদাদ তাকে পেটে-পিঠে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়।
পরে উঠে এসে সে আবারও পুলিশের পা ধরতে গেলে ওই দারোগা তাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে মারধর করে। এসময় আমি ফিরাতে গেলে আমাকেও মারধর করে ছেলেকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ।
এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্েেরক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। বর্তমানে সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নবী হোসেন বলেন, এলাকার গরু চুরির ঘটনায় মামলায় আবুল হাসেমকে সন্দেহজনক ভাবে আসামী করা হয়। ওই মামলায় আবুল হাসেমকে পুলিশ ধরতে তার চার মাসের অন্তসত্তা স্ত্রীসহ বাবা-মাকে মারধর করেছে বলে শুনেছি।
অন্তসত্তা রিপা আক্তার বলেন, পুলিশ যখন আমার স্বামীকে ধরতে যায়, তখন ভাত খাচ্ছিল। এসময় পুলিশ তাকে মারতে মারতে টেনে হিচরে ঘর থেকে বের করলে আমি পুলিশের পা ধরে বলি, স্যার ভাত খাওয়া শেষ হলে ধরে নিয়ে যান। তাকে ভাত খাওয়ার সময় দেন।
তখন এমদাদ নামে এক দারগা আমাকে দুটি লাথি মেরে মাটিকে ফেলে দেয়। পরে উঠে গিয়ে আবারও তাদের পা ধরতে গেলে আবারও আমাকে পেটে-পিঠে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে আমার মাথায় তিন থেকে চারটি আঘাত করে। এ সময় আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি ফেরাতে আসলে তাদেরকেও মারধর করে।
তবে গৌরীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এআই) এমদাদের নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, আসামী ধরতে গিয়ে কাউকে মারধর করা হয়নি। তবে যেখানে আসামী ধরতে গিয়েছিল বৃষ্টি হওয়ায় সে জায়গাটা কর্দমাক্ত ছিল। এসময় আসামী ধরার চেষ্টা করলে তারা দা নিয়ে আসামী ছাড়িয়ে নিতে আসে। এতে ধস্তাধস্তি হলে ওই মহিলা পরে যায়।
তবে ওই মহিলা অন্তসত্তা কিনা বিষয়টি আমার জানা নেই।
এবিষয়ে গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশষ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় ঘটনাস্থলটি পিচ্ছিল ও কর্দমাক্ত ছিল। আসামী গ্রেফতারের সময় তার স্ত্রী পুলিশের পা ধরতে এসে পড়ে গেছে। প্রাথমিক ভাবে এটি একটি দূর্ঘটনা বলে মনে করছি।
তবে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।