পীরগঞ্জে বিদ্যুৎ সংযোগে বাধা, পুলিশ সহ আহত -১২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৪ পিএম, ১২ মে,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৮ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
রংপুরের পীরগঞ্জে সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগে বাঁধা দেয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে অপর পক্ষের ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতিতে নারী পুলিশ সহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আর এ ঘটনায় শানেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মাষ্টার (৩৬) ও তার স্ত্রী, কন্যা ও বোনসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ।
গতকাল বুধবার (১১ মে) উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের পাহাড়পুর মৌজায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে মিজানুর রহমান মাষ্টার পাহাড়পুর মৌজায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি গভীর নলকুপের অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সম্প্রতি একই মৌজায় নিজস্ব জমিতে কাজী পাড়া গ্রামের হামিদ সরদারের পুত্র রশিদ সরদার সেচ পাম্প স্থাপনে উপজেলা সেচ কমিটির নিকট আবেদন করে। সেচ কমিটি তদন্তের পর রশিদ মিয়াকে গভীর নলকুপ স্থাপনে অনুমতি প্রদান করে। মিজানুর রহমান বিষয়টি জানতে পেরে অল্প দূরত্বে ২টি গভীর নলকূপ পরিচালনা সম্ভবপর নয় মর্মে রশিদ মিয়ার অনুমোদন বাতিলে সেচ কমিটির নিকট আবেদন করে। সেচ কমিটি রশিদ মিয়ার গভীর নলকুপ স্থাপনের কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করে। দীর্ঘ কয়েক মাসেও ঘটনার সুরাহা না হওয়ায় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন রশিদ মিয়া। মহামান্য হাইকোর্ট (পিটিশন নং-৪৩২১) ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রশিদ মিয়ার সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগের নির্দেশ প্রদান করেন।
সে নির্দেশ মতে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর লৈাকজন রশিদ মিয়ার গভীর নলকুপে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গেলে বাধার সম্মুখীন হয়। পওে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডিজিএম এ বিষয়ে পুলিশী সহায়তা চেয়ে ৮ এপ্রিল অফিসার ইনচার্জ বরাবর লিখিত আবেদন করেন। বুধবার উক্ত গভীর নলকুপে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার জন্য এসআই সুপদের নেতৃত্বে পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ও পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌঁছালে মিজান মাষ্টারের পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন বাঁধা দেয়।
এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যের সাথে ধাক্কাধাক্কি, ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে ২ নারী পুলিশ সদস্য গোলেনুর ও জান্নাতুল আহত হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে পুলিশ। এসময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা লাঠি চার্জ করলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এতে নায়েক ফারুক উজ জামান, কন্সটেবল তারেক,কামরুল,আরিফুল সহ ৬ পুলিশ এবং অপর পক্ষের ১২/১৫ জন আহত হয়। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সে সময় পুলিশ ধল্লাকান্দী গ্রামের মেহের উদ্দিনের পত্র ও শানেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মাষ্টার (৩৬), তার স্ত্রী বিজলী বেগম (৩২),কন্যা মীম আক্তার (১৬), বোন বড় পাহাড়পুর গ্রামের মোনাজ উদ্দিনের স্ত্রী মিরা বেগম (৪০), অপর বোন প্রথমডাংগা গ্রামের লালমিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম (৩৫) ও নিকট আত্মীয় ধল্লাকান্দী গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিনের স্ত্রী রুপিয়া বেগম (৬০) আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে এস আই সুপদ হালদার বাদী হয়ে থানায় মামলা পুলিশ আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে প্রেরন করে।
এ ব্যাপারে রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ পালন করতে গিয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ পালনে পল্লী বিদ্যুতের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঘটনা স্থলে পুলিশের উপস্থিতি ঘটে। সে সময় মিজান মাষ্টার ও তার পরিবারের লোকজন পুলিশের উপর মারমুখী হয়ে উঠে। পওে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে এবং এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান বলেন, ১০ কার্য দিবসের মধ্যে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ পালনে কয়েকদিন ওই সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হই। অবশেষে পুলিশের সহায়তা কামনা করে চিঠি প্রেরণ করা হয়।