স্বামী আসাদ সরকার ও স্ত্রী সাদিয়া আক্তার যৌতুকের বলি অগ্নিদগ্ধ সাদিয়া না ফেরার দেশে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৫৪ পিএম, ৩০ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০৫ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
দুই বছর আগে বধূ বেশে স্বামীর সংসারে গিয়েছিল সাদিয়া আক্তার। মাত্র ছয় মাসের সুখের সংসার, তারপর যৌতুকের দাবিতে শুরু হয় সংসারে অশান্তি। পর্যায়ক্রমে তা রূপ নেয় নির্যাতনে। অবশেষে স্বামীর দেওয়া কেরোসিনের আগুনে দগ্ধ হয়ে দীর্ঘ ৭ দিন লড়াই করে আজ শনিবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৪টায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটের আইসিইউতে মারা যায় সাদিয়া। পরিবারের মাধ্যমে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর গ্রামের নুরুল হক সরকারের পুত্র আসাদ সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের অপুল সরকারের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের (২০)। বিয়ের পর প্রথম ৫-৬ মাস তাদের সংসার ভালোভাবেই চলছিল। কিন্তু তারপর থেকে শুরু হয় যৌতুকের টাকার জন্য সাদিয়াকে চাপ, যৌতুক না দেওয়ায় চলে শারীরিক নির্যাতন। এর মাঝে তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্মের কয়েক ঘণ্টা পরই মারা যায়। তারপর থেকে যৌতুকের দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দেন স্বামী আসাদ সরকার ও তার পরিবার। টাকা না দিলে আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেন সাদিয়াকে। সাদিয়ার বাবা অপুল সরকার প্রবাস থেকে বাড়ি ফিরে বর্তমানে বেকার। বাবার কাছে এত টাকা চাইতে পারবে না জানালে সাদিয়ার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় আসাদ। গত ২৩ এপ্রিল সকাল আনুমানিক ৮টায় দেবিদ্বার পৌর এলাকার বানিয়াপাড়ার ভাড়া বাসায় সাদিয়ার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন আসাদ। পরে প্রতিবেশীদের কাছে প্রচার করেন-‘গ্যাসের চুলা থেকে আগুনে দগ্ধ হয়েছেন সাদিয়া’। এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে ঢাকায় নেওয়া হয়।
শনিবার সকালে সাদিয়ার নিকটাত্মীয় মাজহারুল ইসলাম ঢাকা শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটের আইসিইউ বিভাগ থেকে মুঠোফোনে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং ঘাতক স্বামীসহ সকল আসামীদের ফাঁসির দাবি জানান।
দেবিদ্বার থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, সাদিয়া আক্তারের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। তার স্বামী আসাদ সরকারকে গ্রেফতারপূর্বক অদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।