খালিয়াজুরী হাওড়ে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে দিলেন সাবেক চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫১ এএম, ২৬ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৪৫ এএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
নেত্রকোনার হাওড়াঞ্চল খালিয়াজুরীর মেন্দিপুর ইউনিয়নের জগনাথপুরের একটি ইজারাকৃত জলাশয়ে পানি প্রবেশ করাতে গিয়ে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হেকিমের বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে বিভিন্ন হাওড়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় কয়েকশ হেক্টর জমির কাঁচাধান তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ বাঁধটি মেরামত করতে কাজ করছেন জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় কৃষকরা।
বাঁধ কেটে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত। তিনি জানান, এটি খালিয়াজুরী হাওড়াঞ্চলের পেতনার বাঁধ। বাঁধটি গত বছর তৈরি করা হয়েছে। এটি ভাঙার কোনো কারণ ছিল না। মরাধনু নদের পাশের বাঁধ এটি। এটিকে ফিশারির জন্য ভেঙে ফেলেছে। আমাদের কর্মচারী ও শ্রমিকদের কাজে লাগিয়েছি। এটি মেরামতের কাজ চলছে।
এদিকে জগন্নাথপুরের কৃষক খোকন মিয়া ও গোলাপ মিয়া সুজন মিয়া, স্বাগত সরকার শুভসহ কয়েকজন কৃষক জানান, পেতনা এলাকায় পেতনা ফিশারির জন্য বাঁধটি সোমবার রাতে মেন্দিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হেকিম ভেঙে দেন। এর পর এলাকার কৃষকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই চেয়ারম্যানকে ধাওয়া করেন। এ সময় চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেল ফিশারিতে ফেলে দেন বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, এটি মরাধনু নদের পাশের একটি ইজারাকৃত বিল। চেয়ারম্যান লোকমান এটির ইজারাদার। নদের পানি এখানে আসার কথা না। স্রোত কম এদিকে। কিন্তু ফিশিংয়ের জন্য ভেঙে দেওয়ায় মদন পর্যন্ত টানের জমিগুলো ডুবে যেতে পারে। প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনো রকমে ভেঙে যাওয়া বাঁধ আটকে রাখা হয়েছিল। আর এখন নিজেরা কেটে দিয়ে কৃষকদের ফসল ডুবিয়ে দেওয়া হলো। এ ধরনের অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তারা।
এদিকে অভিযুক্ত লোকমান হেকিমের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খালিয়াজুরীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম আরিফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কৃষকরা বলছেন— ওই ফিশারির পানি কমে আসছিল। নতুন পানিতে ফিশারির মাছ ডিম দেবে বলে ওই সাবেক চেয়ারম্যান বাঁধ কেটে দিয়ে পানি ঢুকাতে চেয়েছিলেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও বাদী হয়ে একটি মামলা করবেন। আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।