‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রতি মাসে গড়ে গ্রেফতার ৩২’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৭ পিএম, ২৩ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৫৫ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিমাসে গড়ে ১৪৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই ২৬ মাসে এই আইনের অধীনে করা ৮৯০টি মামলায় প্রতি মাসে গড়ে ৮৬ জনের বেশি মানুষসহ দুই হাজার ২৪৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে প্রতি মাসে গড়ে ৩২ জন করে ৮৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ শনিবার সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস)-এর ‘দ্য আনএন্ডিং নাইটমেয়ার : ইমপ্যাক্টস অব বাংলাদেশস ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ডিস্টিঙ্গুইশড প্রফেসর ও সিজিএসের উপদেষ্টা আলী রিয়াজ। সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান ছাড়াও এতে বক্তব্য রাখেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।
আলী রিয়াজ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে সামনের দিনগুলোতে এই আইনের ব্যবহার আরও বাড়তে পারে। তবে নতুন যে ওটিটি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে আইন হচ্ছে, সেটি হলে মানুষ আর কথাই বলবে না। তাই মামলার সংখ্যাও কমে যাবে। তখন হয়তো সরকার বলবে, আলী রিয়াজ বলেছিলেন মামলার সংখ্যা বেড়ে গেছে, এখন তো মামলা হচ্ছে না, কমে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪২৬টি মামলায় প্রায় ৯১৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ২৭৩ জনকে আটক করা হয়েছে। সেই সময় প্রতি মাসে গড়ে ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তার পরের ১১ মাসে ৪৬৪টি মামলায় এক হাজার ৩৩১ জনকে অভিযুক্ত করা হয় ও আটক করা হয় ৬০৯ জনকে। প্রতি মাসে গড়ে ৬৭ জনকে আটক করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, ২০২০ সাল থেকে শুরু করে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই ২৬ মাসে এই আইনের অধীনে করা ৮৯০টি মামলায় প্রতি মাসে গড়ে ৮৬ জনের বেশি মানুষসহ দুই হাজার ২৪৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে প্রতি মাসে গড়ে ৩২ জন করে ৮৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি পরিচালিত হয়েছে আলী রিয়াজের নেতৃত্বে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। ১০ কোটি মানুষের যে ভোটার তালিকা, সেখানে সংবেদনশীল তথ্য আছে। সেগুলোর সুরক্ষা প্রয়োজন। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে এখন আরও অনেক বিষয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আর্টিকেল লেখার সময় বহু চিন্তা করতে হয়। আমি ফেসবুক রাখি না। ই-মেইলে অনেকে কিছু লিখে পাঠান। আমি উত্তর দেই না বললেই চলে। বই লিখতে গেলেও চিন্তা করতে হয়। তাই ভ্রমণকাহিনি লিখি। অন্য কিছু লিখতে সাহস পাই না।’