ঝড়ে উড়ে গেল উপহারের ঘরের চাল, ভেঙেছে পিলার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:১৭ পিএম, ১৭ এপ্রিল,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৫৯ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
চুয়াডাঙ্গার আকন্দবাড়িয়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের রঙিন ঘর। উড়ে গেছে টিনের চাল। ভেঙে গেছে সামনের সব পিলার। ফাটল ধরেছে পাশের অন্য একটি ঘরেও।
সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া গ্রামে বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে চালবিহীন ঘরেই খুব কষ্টে বসবাস করছেন ভুক্তোভোগী দুই পরিবার। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে এসব ঘর নির্মাণ করায় এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া গ্রামে বিশ্বরোডের কাছে উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে দুটি ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। সেখানে দুটি দৃষ্টিনন্দন রঙিন টিনের দুই কামরার সেমিপাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। প্রতিটি গৃহ নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। ঘর দুটি বরাদ্দ পান আকন্দবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল করিমের স্ত্রী মুসলিমা খাতুন ও এক মিস্ত্রীর মেয়ে কোহিনুর বেগম।
মুসলিমা খাতুন বলেন, গত পৌষ মাসে আমাকে ঘর দেওয়া হয়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে বসবাস করছি। গত বৃহস্পতিবার রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ঘরের টিনের চাল উড়ে গিয়ে পড়েছে অন্যের বাড়িতে। একেবারে ভেঙে গেছে সামনের তিনটি পিলার। ঝড়ের সময় আমরা ঘরের মধ্যে ছিলাম। কোন রকমে প্রাণ বেঁচে গেছে আমার পরিবার।
কোহিনুর বেগম জানান, ঝড়ে আমার ঘরের পিলারে ফাঁটল ধরেছে। যেকোন সময় আবারও ঝড় হলে সেটাও ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। খুব ভয়ের মধ্যে এই ঘরে বসবাস করছি।
এলাকাবাসী অভিযোগ, দুর্যোগ সহনীয় ঘরের কথা বলা হলেও সেই ঝড়ে উড়ে গেছে টিনের চাল। ভেঙে গেছে পিলার। ঘর নির্মাণের শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালু, কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। এই কারণে ঘরগুলো টেকসই হয়নি। তখন সংশ্লিষ্টেদের কাছে অনেক অভিযোগ করেও কোনো কিছুই হয়নি।
বেগমপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ভেঙে পড়া ঘরের তথ্য সংগ্রহ করে উপজেলায় পাঠানো হয়েছে। দ্রুত মেরামতের জন্যও জানানো হয়েছে।
বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে জনপ্রতিনিধিদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া বলেন, আমার যোগদানের পূর্বে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। তখন বাজেট কম ছিলো। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মেরামতের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।