ফের নদীর পানি বৃদ্ধিতে শঙ্কায় কৃষকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৪ পিএম, ১৫ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১২:০৩ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
বোরো ধানের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত সুনামগঞ্জের প্রায় প্রতিটি হাওরেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে আবারও সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ও ধান নিয়ে শঙ্কায় আছেন কৃষকরা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী দুই দিন ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
গত কয়েক দিন সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি হ্রাস পেলেও গত বৃহস্পতিবার থেকে সুরমা নদীর পানি ফের বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢলের পানি আসলে ফসলরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে পড়ে ফসলহানির শঙ্কা কৃষকদের।
গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি ৯১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০ টায় ৫ দশমিক ১০ মিটারে প্রবাহিত হচ্ছে। হাওরের পাকা ধান দ্রুত কেটে ফেলতে কৃষকদের অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমি চাষাবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ হাজার ১৫ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ২২ হাজার হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। প্রায় ৫০০টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে হাওরে ধান কাটা হচ্ছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, হাওরের বোরো ধান নিয়ে মানুষ খুব চিন্তায় আছে। কারণ বাঁধের অবস্থা বেশি ভালো না। যদিও সব সময় বাঁধে কাজ করা হচ্ছে। নদীতে পানি, উজান থেকে ঢলের পানি নামলে বাঁধ ও ধান দুটি বিপদে পড়বে। নদীর পানি নাকি আবার বাড়তে পারে, তাই কৃষি অফিসের লোকজন ৮০ ভাগের ওপরে পাকা ধান তাড়াতাড়ি কাটার জন্য অনুরোধ করছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সুনামগঞ্জের প্রায় সব কয়’টি হাওরেই ধান কাটা শুরু হয়েছে। যেসব জমির ধান ৮০ ভাগ পাকা রয়েছে সেই জমির ধান দ্রুত কেটে তোলার জন্য আমরা কৃষকদের অনুরোধ করছি। কৃষকদের পাশাপাশি ৫০০ বেশি কম্বাইন্ড হারভেস্টার হাওরে ধান কাটছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে হাওর এলাকার অন্তত ৯০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের ফলে গত বৃহস্পতিবার থেকে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্য নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই হাওরের পাকা ধান দ্রুত কেটে ফেলার জন্য আমরা সকল কৃষককে অনুরোধ জানিয়েছি। এছাড়া বাঁধগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি। উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা দিন-রাত বাঁধের কাজ করছেন।