১০ বছরেও খুলনায় আধুনিক কারাগার নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৬ পিএম, ১১ এপ্রিল,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৫৭ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
গত ১০ বছরেও খুলনায় আধুনিক কারাগার নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। ডুমুরিয়া উপজেলার চক হাসানখালি মৌজায় ৩০ একর জমির উপর ২শ’ ৫১ কোটি ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে গত ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে কারগারটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী ২০ শতাংশ কাজ সম্পন্নের জন্য চলতি অর্থবছরে ২৮৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা অনুমোদন হয়েছে।
নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত অধিদপ্তর-২ সূত্রে জানা গেছে, দুই হাজার বন্দী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এ কারাগারটির জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাট শেষে ২০১৭ সাল থেকে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়। গত ২০১৯ সালের জুন মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে মাত্র ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়। এরপর প্রায় তিন বছরে ১০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। দুই হাজার বন্দী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অবকাঠামো নির্মাণ হলেও ভবিষ্যতে আরও দুই হাজার বন্দীর অবস্থানের মতো স্থাপনা তৈরির জন্য স্থান সংরক্ষিত থাকছে।
সূত্রমতে, ২০ শতাংশ কাজ শেষ করতে গত ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ২শ’ ৮৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার একটি ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) তৈরি করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়। পরিকল্পনা কমিশন ওই টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে।
সূত্র জানান, অত্যাধুনিক কারাগারটিতে ছোট-বড় অর্ধশত বহুতল ভবন থাকছে। এর মধ্যে ছয় তলা ভবন ১০ টি, তিন তলা ভবন একটি এবং বাকীগুলো চার তলা স্থাপনা। এসব স্থাপনায় প্রশাসনিক ভবন, বিচারাধীন ব্যারাক, মেইল প্রিজিনার্স ব্যারাক (সাজাপ্রাপ্ত), মহিলা শ্রেণি প্রাপ্ত বন্দী ব্যারাক, নারী-পুরুষের পৃথক সেল ও সাক্ষাতকার রুম, শিশু-কিশোর বন্দী ওয়ার্ড, কনডেম নিরাপত্তা সেল ও ফাঁসির মঞ্চ, হাসপাতাল, মসজিদ, স্কুল, রান্নাঘর, শৌচাগার ও গোসলখানা, সেলুন ও লন্ড্রি, কেস টেবিল, মোটিভেশন সেন্টার ও পাঠাগার, ওয়ার্ক সেড ও স্টাফ কোয়ার্টার নির্মিত হচ্ছে। কারাগারে স্টোর বিল্ডিং, ফুয়েল স্টোর ও পাওয়ার সাব স্টেশন, পাম্প হাউজ, গার্ড হাউজ, দর্শনার্থীদের বিশ্রামাগারসহ ক্যান্টিন, সেন্ট্রি পোস্ট, সেন্ট্রিবক্স এম.এস গেট, গ্যারেজ, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, রাস্তা, ড্রেন, বহিস্থ পানি সরবরাহ, দুইটি পুকুর খনন, সোওয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং প্লান্ট থাকছে। এক ডজন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ করছে।
গণপূর্ত অধিদপ্তর-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ২০১১-১২ সাল থেকে শুরু হওয়া জমি অধিগ্রহণ শেষে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নকারী কর্র্তৃপক্ষ ২০১৬ সালে জায়গা বুঝে পান। যে মাস্টারপ্লান অনুসরণ করে কাজ শরুর কথা, সেটি কারা কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক সংশোধিত হয়। নক্সা অধিদপ্তরের কাছ থেকে চূড়ান্ত মাস্টার প্লান পাওয়ার পর ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে স্থাপনা নির্মাণের জন্য প্রাক্কলন তৈরি এবং দরপ্রত্র আহবান কার্যক্রম আরম্ভ হয়। ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর মহামারি করোনা দুর্যোগে বিভিন্ন সময় পরিবহণ বন্ধ থাকায় নির্মাণ সামগ্রির সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। এসব কারণেই মূলত নির্মাণ কাজে অতিরিক্ত সময় লেগেছে। আগামী ২০২৩ সালের জুনে আধুনিক কারাগার নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।