টাঙ্গুয়ার হাওরে ফের ভাঙল বাঁধ, পানির নিচে ১০০ একর বোরো ফসল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:০৬ পিএম, ৮ এপ্রিল,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫০ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জে সুরমাসহ বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে একের পর এক ভাঙছে বাঁধ। আর এতে তলিয়ে যাচ্ছে হাওরপাড়ের কৃষকের বোরো ফসল। সর্বশেষ আজ শুক্রবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে আরও একটি বাঁধ ভেঙে প্রায় ১০০ একর বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এদিন উপজেলার এরাইল্লা কোনা মনদিয়াতা বাঁধটি ভেঙে গিয়ে এ ফসলহানির ঘটনা ঘটে। হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধে বিপর্যয় দেখা দেয়ায় মাথায় হাত পড়েছে সেসব অঞ্চলের কৃষকের।
বাঁধ ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করে তাহিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান কবীর বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরে যে বাঁধটি ভেঙেছে সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়। আমরা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। পরে বিস্তারিত বলতে পারব।’
স্থানীয় কৃষক বিলাল মিয়া বলেন, ‘বাঁধ দিয়া কিতা লাভ হইলো, আমরা ত ফসল ঘরে তুলতে পারলাম না। এখন ছেলেমেয়ে নিয়া সারাবছর কীভাবে কাটামু।’
কৃষক নানু মিয়া বলেন, ‘সরকার শতকোটি টাকা বরাদ্দ দেয় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য। কিন্তু সে টাকা দিয়ে পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) সদস্যরা ঠিকমতো কাজ করেন না। ঠিকমতো কাজ করলে এতো অল্প পানিতে বাঁধ ভাঙতো না।’
অপর কৃষক দিলোয়ার মিয়ার ভাষ্য- ‘তাহিরপুরের এরাইল্লা কোনা মনদিয়াতা বাঁধ ভেঙে পানি এতে তলিয়ে গেছে এক শ একর বোরো ফসল। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম।’
গত এক সপ্তাহে জেলার তাহিরপুর, ধর্মপাশা, শাল্লা ও দিরাই- এই চার উপজেলায় নয়টি বাঁধ ভেঙে কয়েক হাজার হেক্টর বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় সেসব অঞ্চলের কৃষকের মনে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও নতুন একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে বোরো ফসলের ক্ষতি নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে কৃষকদের মাঝে। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জেলার ১১টি উপজেলায় ফাটল দেখা দেয়া বাঁধগুলো দিন-রাত পাহারায় রেখেছে হাওর পাড়ের মানুষ।
গত ১ এপ্রিল তাহিরপুরের নজরখালী বাঁধ ভেঙে ১২০ হেক্টর বোরো ফসল তলিয়ে যায়। এরপর একে একে আরও আটটি বাঁধ ভেঙে যায়। এছাড়া জেলার ছোট-বড় সব হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।