ফরিদপুরে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে লাশ হয়ে ফিরলো স্কুলছাত্র সাব্বির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:১৯ পিএম, ২ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৩৪ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
তিন বেলা পেটপুরে খাবারই জোটে না। গরিব রিকশাচালক বাবার অভাবি সংসরে। তারপর আবার পড়ালেখার খরচ। তাই স্কুল আর পড়ালেখার ফাঁকে বাবার রিকশা চালিয়ে কিছু টাকা আয় হতো যা দিয়ে চলতো সাব্বির বিশ্বাসের (১৫) পড়ালেখা। কিন্তু রিকশা চালানোই যেন তার জীবনে কাল হলো।
আজ শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে ফরিদপুর সদরের ইশান গোপালপুর-দয়ারামপুর এলাকার একটি ঘাসক্ষেত থেকে সাব্বির বিশ্বাসের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত সাব্বির ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আছিরুদ্দিন মুন্সিরডাঙ্গী (কালুর বাজার) এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম আলমগীর বিশ্বাস। মায়ের নাম সাজেদা বেগম। সাব্বির পদ্মারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল। মোট চার ভাইয়ের মধ্যে সাব্বির মেজ।
এলাকাবাসী, পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১ এপ্রিল) দুপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সাব্বির। পরে রাতে বাড়ি না ফেরায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে পরিবার। শনিবার সকালে একটি ঘাসক্ষেতে সাব্বিরের মরদেহটি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। নিহত সাব্বিরের বাবা আলমগীর বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার সকালে আমার সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। সে জানায় তার খাতা-কলম ও স্কুলের সব মিলিয়ে ৭-৮শ টাকা লাগবে। শুক্রবার স্কুল বন্ধ, সে রিকশা নিয়ে বের হয়। যা আয় করতে পারে আর বাকিটা আমাকে দিতে বলে। কিন্তু সে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে আর ফেরেনি।
তিনি বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করি। শনিবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আহাজারি করে তিনি বলেন, আমার ছেলেও নেই, রিকশাও নেই। আমার সব শেষ। আমার জানামতে আমার কোনো শত্রু ছিলো না।
সাব্বিরের চাচা মো. সোহেল বিশ্বাস বলেন, আমাদের যৌথ পরিবার। সাব্বির পড়ালেখায় খুব মনোযোগী ছিলো। নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে মাঝে মাঝে রিকশা চালাতো। আর এটাই তার জীবনে কাল হলো। ধারণা করা হচ্ছে রিকশা ছিনিয়ে নিতেই তাকে হত্যা করা হয়ছে।