জয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১০ পিএম, ১ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১৫ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
গোপালগঞ্জে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চোখে গুলি লেগে গুরুতর আহত মিঠুন (২৫) নামে একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১ মার্চ) সকাল ৬টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নের পার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে এ সংঘর্ষের সময় ওই এলাকার বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ১১ জনসহ মোট ১৪ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
অন্য গুলিবিদ্ধরা হলেন- মিরাজ শেখ (৫২), হেমায়েত মোল্লা (৫০), তুহিন মোল্লা (৩০), সুজন মোল্লা (২৮), মো: বুলবুল মোল্লা (২৬), মাসুদ মোল্লা (৩০), নাসির মোল্লা (৪০), রবিউল মোল্লা (৩৫), ছাবের মোল্লা (২২), রমজান মোল্লা (২৮), তুষার মোল্লা (২০), মশিউর শেখ (৩৫), রাসেল শেখ (২০) ও উজ্জ্বল শেখ (১৮)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে শুকতাইল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান রানা মোল্লা ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ আবেদ আলীর সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। সোমবার সকালে রানা চেয়ারম্যানের সমর্থক মুরাদ শেখ ও তার ছেলে রিয়াজ শেখকে আবেদ আলীর সমর্থকরা মারপিট করে। এতে মুরাদ শেখের হাত ভেঙ্গে যায়। তারই জেরে দু’পক্ষের লোকজন মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় গুলিবর্ষণ (ছররা গুলি) ও বাড়িঘরে হামলা এবং ভাংচুর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল ৭টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে।
গোপালগঞ্জে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্র কুমার বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে ভর্তি ১৪ জনের মধ্যে ১১ জন গুলিবিদ্ধ। এদের শরীরে ছড়া গুলি পাওয়া গেছে। গুলিবিদ্ধ একজনকে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ১৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শেখ আবেদ আলীর সমর্থকরা গুলিবর্ষণ করেছে এমন অভিযোগ করে হাসপাতালে ভর্তি গুলিবিদ্ধ নাসির মোল্লা (৪০) জানান, গুলিবিদ্ধ আরো চারজন বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে।
সাবেক চেয়ারম্যান আবেদ শেখ জানান, ‘বর্তমান চেয়ারম্যান রানা মোল্লা চেয়ারম্যান হওয়ার পর খেকেই এলাকায় দলবাজি শুরু করে দিয়ে গ্রামের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন।’
তিনি আরো জানান, এলাকায় এই দ্বন্দ্ব মিটানোর জন্য একাধিকবার বর্তমান চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করলেও তিনি সাড়া দেননি। সংঘর্ষ চলাকালে ২/৩টি বাড়িতে ভাংচুর এবং একটি বড় দোকানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে মুঠোফোনে কথা না বলে সাংবাদিকদের সাথে দেখা করে কথা বলবেন বলে জানান চেয়ারম্যান রানা মোল্লা।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল বলেন, শুকতাইল ইউনিয়নের পার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।