সিদ্ধিরগঞ্জে ডাইংয়ের বিষাক্ত পানি ও বর্জ্যে জনজীবন অতিষ্ঠ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৮ পিএম, ১ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:১১ এএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
নাসিকের সিদ্ধিরগঞ্জে ৫নং ওয়ার্ডের সাইলো রোডের চৌরাপাড়া এলাকায় ওল্ড ফ্যাশন লিমিটেড এর ডাইংয়ের ছড়িয়ে পড়া এসিড মিশ্রিত পানি ও বিষাক্ত বর্জ্যে দিন দিন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ঐ এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ৩ থেকে ৪শ পরিবারের। বিগত ৫ বছরেও তাদের এমন দুর্ভোগপূর্ণ জীবন-যাপন থেকে পরিত্রাণে সুদৃষ্টি দেয়নি কেউ।
ভুক্তভোগীরা ওই ডাইং এর মালিক কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় জনপ্রতিধি, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সমাজতিদের দ্বারে দ্বারে এ থেকে প্ররিত্রান পেতে আকুতি জানালেও কেউ এগিয়ে আসেনি এ সমস্যার সমাধানে। এমতাবস্থায় একরকম অসহায়ত্বের মধ্যেই এলাকার পরিবারগুলো দিনাতিপাত করছে। এখানকার শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধুলা, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন বিহীন একটি পরিবেশ থেকে। মারাত্মকভাবে পরিবেশ দুষিত হয়ে দিনদিন নানা রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে।
ভুক্তভোগী এলাকাবাসী মো. ফজল মিয়া বলেন, সানোয়ার ও রব সাহেবের কারখানার ডাইংয়ের পানিতে এলাকা ডুবে যায়। এর ফলে মানুষ চর্ম রোগ, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছে। ময়লা পানি ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে এ এলাকার প্রায় অধিকাংশ পরিবারই আজ ক্ষতিগ্রস্থ।
আরেক ভুক্তভোগী এরশাদ বলেন, ঘর থেকে বাচ্চারা ঘর থেকে বের হতে পারেনা, খেলাধুলা করতে পারেনা। পানির কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছে। ফলে দুর্ভোগ আরো বেড়ে গেছে এবং দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সম্প্রতি ওই ডাইংয়ের ছড়িয়ে পড়া এসিড মিশ্রিত পানি ও বিষাক্ত বর্জ্যে চৌরাবাড়ী এলাকার উত্তরপাশে বসবাসরত প্রায় ২৫ থেকে ৩০টির বেশি বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ চলে আসা এ সমস্যা থেকে মুক্তি না পেয়ে এখানকার অনেক বাড়ির ভাড়াটিয়ারা অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।
বাড়ি ঘরের চালের টিন, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী এসিডের প্রভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ডাইংয়ের জমে থাকা পানি থেকে পচাঁ দূর্গন্ধও ছড়াচ্ছে। চর্ম রোগ, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকাবাসী।
ডাইং কারখানা থেকে এসিড মিশ্রিত পানি ও বিষাক্ত বর্জ্য অপসারণের জন্য যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা রয়েছে সেটি দীর্ঘদিন থেকে অকার্যকর হয়ে আছে। সিটি করপোরেশন গঠনের পর এ ড্রেনেজ ব্যবস্থাটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ হলেও নতুন করে নির্মাণ বা সংস্কার করা হয়নি। ফলে ওই ড্রেন দিয়ে পানি বর্জ্য নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে আছে।
আর ওইসব বিষাক্ত এসিডের পানি ও বর্জ্য দীর্ঘদিন থেকে জমে পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। সামনের বর্ষাকালে ভোগান্তি বাড়বে আরো। বৃষ্টি আর ওই ডাইংয়ের বর্জে জমে বিষাক্ত দূগর্ন্ধের সৃষ্টি হবে।
এ বিষয়ে নাসিক ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মুহাম্মদ সাদরিল বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে কারখানার মালিক পক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, ড্রেনে জ্যাম থাকার কারণে এমনটা হয়েছে, তারা ড্রেনের জ্যাম পরিস্কার করে দিবে। তারা পরিস্কারও করেছে, কিন্তু পানি নামেনি। পরে এলাকাবাসী আমার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমি মাননীয় মেয়র, জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর চিঠি পাঠাবো দ্রুত ব্যবস্থার নেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে কথা বলতে ডাইং কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগোযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।