এক শতক জমির জন্য ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৫৬ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রকাশ্যে সৎভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আবদুল মালেক নামে এক ব্যক্তি। নিহতের নাম হাফেজ আহমেদ।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শ্রীপুর ইউনিয়নের পাইকোটা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত আবদুল মজিদের ছেলে হাফেজ আহমেদ (৬০) ও সাবেক সেনাসদস্য আবদুল মালেকের (৬৫) জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামআদালতে একাধিকবার সালিশ-বৈঠক হয়। সভায় হাফেজ আহমেদ এক শতক জমি বেশি পান। বিষয়টি বড় ভাই আবদুল মালেক মেনে নিতে পারেননি। এ নিয়ে প্রায়ই দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। শুক্রবার সকালে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে দিয়ে হাফেজ আহমেদকে একটি চা-দোকানে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে দুই ভাইয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে দোকানে থাকা একটি ছুরি নিয়ে প্রকাশ্যে হাফেজ আহমেদকে কুপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান আবদুল মালেক। স্থানীয়রা হাফেজ আহমেদকে উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
হাফেজ আহমেদের ছেলে মোস্তফা কামাল বলেন, তার দাদা আবদুল মজিদের দুই বউ ছিল। হাফেজ আহমেদ পরের বউয়ের ছেলে। তার জেঠা আবদুল মালেকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল তাদের। গতকাল শুক্রবার সকালে তার বাবাকে আবদুল মালেক লোক মারফতে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার বলেন, হাফেজ আহমেদ ও আবদুল মালেকের সম্পত্তি নিয়ে ২০ বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামআদালতে একাধিক সালিশ সভা হয়। সভার কোনো রায়ই আবদুল মালেক মানেন না। শুক্রবার স্থানীয় মমতাজ মিয়াকে দিয়ে আবদুল মালেক তার সৎভাই হাফেজ আহমেদকে বাড়ির পাশে চা- দোকানে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে দুই ভাইয়ের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আবদুল মালেক হাফেজ আহমেদকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
আবদুল মালেকের স্ত্রী জোবেদা বেগম বলেন, ‘আমি চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি সেখানে লোকজন জড়ো হয়ে আছে। মাটিতে অনেক রক্তের দাগ লেগে আছে। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি, আমার স্বামী আবদুল মালেক দেবর হাফেজ আহমেদকে কুপিয়ে হত্যা করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, হাফেজ আহমেদ ও আবদুল মালেক সম্পর্কে সৎভাই। তাদের দুজনের মধ্যে এক শতক জায়গা নিয়ে বিরোধ ছিল। সকালে হাফেজ আহমেদকে কুপিয়ে হত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আবদুল মালেককে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান চলছে।