চৌগাছায় খাল পাড়ের সরকারী রাস্তার মাটি রাতের আঁধারে কেটে সাবাড়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৬ পিএম, ২২ জানুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:২৫ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
যশোরের চৌগাছায় সরকারী খাল খননের মাটি দিয়ে নির্মিত রাস্তা কেটে সাবাড় করেছে একটি মহল। রাতের আধারে সমুদয় মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ। জনগুরুত্বপূর্ণ সরড়কটি যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে। এলাকাবাসি ঘটনাটি তদন্তপূর্বক যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলা পুড়াপাড়া আদিবাসি মহল্লার পাশ হতে একটি খাল (কাটাখালি খাল বলে পরিচিত) খড়িঞ্চা বাওড়ে মিলিত হয়েছে। স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের মাঠের ফসর রক্ষায় আশির দশকে খালটি খনন করা হয়। খাল খননের পর এর উত্তর পাশ দিয়ে (প্রায় ৩ কিঃ মিঃ) একটি সুপ্রশস্ত সড়ক পুড়াপাড়া হতে দেবুলয় হয়ে কমলাপুর মোড়ে উঠেছে।
সড়কটি স্থানীয়দের শুধু চলাচল করাই না এলাকার হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল ঘরে আনতে ব্যবহৃত হয়। দু’বছর আগে সরকার খালটি পুনরায় খনন করেন। খাল খননের মাটি দিয়ে পাশের সড়কটি আরও সুন্দর ও চলাচল উপযোগী করেন সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তোতা মিয়া। হঠাৎ গত সপ্তাহে সাঞ্চাডাঙ্গা গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত মোশরফ হোসেন ওরফে মুসা কাক্কার ছেলে মাসুদ রানা সড়কের মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাঘাকুড়ো মাঠ নামক স্থান থেকে সড়কের পাশের সমুদয় মাটি তিনি রাতের আঁধারে কেটে অন্তত ২০টি ট্রাক যোগে অন্যত্র বিক্রি করেছেন। বর্তমানে সড়কের মাটি কেটে নেওয়া স্থানটি চরম ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বর্ষা মৌসুম এলে সড়কটি ভেঙ্গে খালে মিশে যাওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে।
গতকাল সরেজমিন যেয়ে দেখা যায়, মাটি কেটে নেয়া স্থানটিতে কোন রকমে মানুষ চলাচল করতে পারছে। মাঠে কর্মরত স্থানীয় কৃষক আলী বক্্র, আমিরুল ইসলাম, রাসেল হোসেন, আওলিয়ার রহমান, হচেন আলী, মশলেম উদ্দিন, মোশারফ হোসেন বলেন, যে ব্যক্তি এই সড়কের মাটি কেটেছেন সে নিজের জমি থেকে মাটি কেটেছে বলে দাবি করছেন। কিন্তু এটি তো একটি সড়ক, কয়েক গ্রামের মানুষ বছরের পর বছর সড়কটি ব্যবহার করে আসছে। প্রথমে দিনের আলোয় মাটি কাটতে শুরু করলে এলাকাবাস বাধা দেয়। এরপর কিছু দিন চুপচাপ থাকার পর রাধের আধারে একাধিক ট্রাক ও এক্সিমিটার দিয়ে মাটি কেটে সরিয়ে ফেলেছে। মাটি কেটে নেয়ার ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ্য চাষিরা। কারণ রাস্তা নষ্ট হয়ে গেলে তাদের মাঠে যাওয়া আসা ও ফসল ঘরে তোলা হয়ে যাবে কষ্টসাধ্য। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হলে সকলেই উপকৃত হবে।
এবিষয়ে মাসুদ রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেখান থেকে মাটি কাটা হয়েছে সেখানে আমার ৮/১০ বিঘা জমি আছে। খাল খননের সময় মাটি আমার জমিতে এসেছে, তাই সেই মাটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, মাটি কাটার খবরে সেখানে যেয়ে আমি বাধা দিলেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। মাটি কেটে নেয়ায় সড়কটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্বরুপদাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল কদর বলেন, প্রথম যেদিন তারা মাটি কাটতে শুরু করে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যেয়ে মাটি কাটতে নিষেধ করি। তারা নিষেধ শুনে চলে যায়, পরবর্তীতে জানতে পারি রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে গেছে। তারা একটি চরম অপরাধ করেছে বলে আমি মনে করি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহীত করা হয়েছে।