নীলফামারীতে ভগ্নিপতির অপহরণের শিকার শ্যালিকার লাশ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৭ পিএম, ২০ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:০৪ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ভগ্নিপতির অপহরণের শিকার শ্যালিকা ইতির (১৯) লাশ পাওয়া গেল তিন মাস পর।
গতকাল বুধবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গোপনে লাশের দাফনের সময় পুলিশ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ালপুকুর গ্রাম থেকে ইতির লাশ উদ্ধার করে।
এ সময় পালিয়ে যায় ইতির ভগ্নিপতি সহীদ শাহ ও তার পরিবারের লোকজন। নিহত ইতি উপজেলার সদর ইউনিয়নের মুসা গ্রামের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। সহীদ শাহ পানিয়ালপুকুর গ্রামের জাকারিয়া শাহ’র ছেলে।
মৃতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের দু’মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে স্মৃতি এর সাথে পারিবারিক ভাবে সহীদ শাহর বিয়ে হয়। তারা জয়পুরহাট জেলা শহরে থাকতো। তাদের একটি ৭ বছরের সৌধ্য নামের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিবাহের কিছুদিন পর পারিবারিক কলহে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে স্মৃতি সন্তানসহ বাবার বাড়ি ফিরে আসে।
এ অবস্থায় গত ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারী সহীদ শাহ্ তার একমাত্র শ্যালিকা ইতিকে অপহরণ করে। এঘটনায় পরিবারের পক্ষে থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ ওই সময় অভিযান চালিয়ে ইতিকে উদ্ধার ও অপহরণকারী আসামী ভগ্নিপতি সহীদ শাহকে(৩৬) গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছিল। ৬ মাস পর সহীদ শাহ জামিনে ছাড়া পায়। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর সহীদ শাহ আবারও ইতিকে অপহরণ করে। এ ঘটনায় ইতির বাবা কিশোরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের উদ্ধার করতে পারেনি।
গত ১৮ জানুয়ারী শাহরিয়ার সাগর নামের এক যুবক মঙ্গলবার রাত ২টায় ফেসবুকে একটি মেয়ের লাশের ছবি সহ একটি স্ট্যাটাস দেয়। তাতে লেখা ছিল রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি মেয়ের লাশ ফেলে সহীদ শাহ নামের একজন লোক পালিয়ে গেছে। মেয়েটির বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। ফেসবুকে ছবি দেখে অপহৃতা ইতির বাবা নিজের মেয়েকে চিনতে পেরে ও রংপুর মেডিকেলে ছুটে যায়। কিন্তু তিনি সেখানে গিয়ে মেয়ের লাশ দেখতে না পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন।
ইতির বাবা সিরাজুল ইসলাম জানান, বুধবার সকালে রংপুরে মেয়ের লাশ দেখতে না পেয়ে তিনি কিশোরগঞ্জ থানায় আসেন। বুধবার বিকাল ৪টায় তিনি জানতে পারেন তার ছোট মেয়ের লাশ বড় মেয়ের জামাই সহীদ শাহের বাড়িতে এনে গোপনে দাফন করা হচ্ছে। সেখানে তিনি পুলিশ নিয়ে গেলে বাড়ির লোকজন লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। ইতির বাবার অভিযোগ তার মেয়েকে নানাভাবে শারিরীক নির্যাতন করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে একটি হত্যা মামলা দায়ের করবেন।
কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল জানান, পূর্বের অপহরণ মামলার সুত্র ধরে আমরা ইতির লাশ বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারীর জেলা মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়না তদন্তের রির্পোট পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।