মঙ্গলে বসবাসের উপযোগী বাড়ি!
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:৫২ এএম, ২০ আগস্ট,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫৪ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
পৃথিবীর বাইরের জগৎকে জানার আকাঙ্ক্ষা মানুষের বহুদিনের। সেই লক্ষ্যে মানুষ পাড়ি দিয়েছে বিশাল পথ। তার পায়ের ছাপ পড়েছে চাঁদে। মঙ্গলেও অবতরণ করেছে নভোযান। এত কিছুর পরও ক্ষান্ত হয়নি মানুষ। এবার শুরু হয়েছে মঙ্গলে বাড়ি বানানোর প্রস্তুতি। কেমন হবে সেই বাড়ি? কী কী সুবিধা থাকছে সেখানে? মঙ্গলে বসবাসের উপযোগী বাড়ি বানিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের স্থপতি ও বিজ্ঞানীদের একটি দল। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
চন্দ্রজয়ের পর কাছাকাছি দূরত্বের অন্য গ্রহগুলোতে পদচিহ্ন রাখার লক্ষ্যে মানুষ নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আশির দশকে বেশ কয়েকবার সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন মহাকাশ সংস্থা মঙ্গলগ্রহে সফলভাবে মহাকাশযান অবতরণে সক্ষম হয়। এরপরই পৃথিবীর বাইরে মঙ্গলগ্রহে মানুষের বসবাসযোগ্য আবাসস্থল গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন বিজ্ঞানীরা।
দিন দিন বাড়ছে পৃথিবীর জনসংখ্যা। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি কমছে আবাসস্থল। তবে এই বিপদ আগেই টের পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অনেকেই বলছেন, মানুষের পরবর্তী ঠিকানা হতে পারে দূরের লাল গ্রহ মঙ্গল। এরই মধ্যে সেখানে বাড়ি বানানোর প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে।
যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল শহরে প্রদর্শিত হয়েছে লাল গ্রহটিতে বসবাসের উপযোগী করে বানানো বিশেষ একটি বাড়ি। এল্লা গুড ও নিকি কেন্ট নামের দুই ব্রিটিশ শিল্পী সাত বছরের চেষ্টায় একত্রিত করেন একদল স্থপতি ও বিজ্ঞানীদের একটি দল। যারা অ্যান্টার্কটিকার মতো জায়গায় থাকার জন্য স্থাপনা বানানোর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। তাদের নিরলস চেষ্টার ফসল এই বাড়িটি।
মঙ্গলে স্বাভাবিকভাবে নিশ্বাস নেয়ার মতো অক্সিজেন না থাকার বিষয়টি মাথায় রেখে বাড়িটিকে সম্পূর্ণ বায়ুরোধী করে বানানো হয়েছে। এর ভেতরে থাকছে বিশুদ্ধ অক্সিজেন। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি এবং কসমিক রেডিয়েশন যেন ঘরে প্রবেশ করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও ৫৭০ বর্গফুটের দোতলা বাড়িটিতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সুবিধার জন্য বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল। আছে দুটি বড় শোবার ঘর।
স্থপতি হিউ ব্রাউটন বলেন, বাড়িটি বিশেষ কংক্রিট দিয়ে নির্মিত, যা পানি ও মঙ্গলের মাটি দিয়ে বানানো। ভয়ংকর সূর্যরশ্মি থেকে বাড়ির বাসিন্দাদের রক্ষা করার মতো করে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে।
জানা যায়, মাইনাস ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারবে বাড়িটি। বাইরের চরম আবহাওয়া থেকে পুরোপুরি সুরক্ষিত থাকবেন ভেতরের সবাই।
লাল গ্রহে কোনো গাছ নেই। তবে মঙ্গলের এই বাড়ির বাসিন্দাদের সেই চাহিদার বিষয়টিও বিবেচনা করেছেন এর নির্মাতারা। বাড়ির ভেতরেই গাছ লাগানোর বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
মঙ্গলে বসবাসের জন্য নির্মিত বিশেষ এই বাড়িটির দরজা সাধারণ মানুষের জন্য খোলা হবে চলতি মাসের শেষে। অক্টোবর পর্যন্ত যে কেউ বাড়িটিতে প্রবেশ করতে পারবেন।