যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েও পায়নি ইরান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩০ পিএম, ২১ মে,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০১:৩০ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
রোববার রহস্যজনক এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ানসহ ৯ জন। দুর্ঘটনার কবলে পড়া হেলিকপ্টারটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বেল ২১২ মডেলের। এ ঘটনার পরই তাৎক্ষণিকভাবে সাহায্যকারী দল পাঠায় তুরস্ক ও রাশিয়া। যদিও হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের পর সেটির প্রস্তুতকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও সাহায্য চেয়েছিল ইরান। তবে সেই সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানায় ওয়াশিংটন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেটি খুঁজে পেতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিল ইরান সরকার। সোমবার ইরানের পক্ষ থেকে সাহায্য চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক কোনো সম্পর্ক না থাকার পর তেহরান কীভাবে ওয়াশিংটনের কাছে সাহায্য চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছে সে বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জানান, এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত বলছেন না। তবে ইরান সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল। ওয়াশিংন জানিয়েছিল এ ধরনের আবেদনে তারা বিদেশি সরকারগুলোকে সাহায্য করে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত মূলত রসদ সরবরাহজনিত কারণে ইরানকে সেই সহায়তা করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বেল ২১২ হেলিকপ্টারটি ৭০ দশক থেকে ইরানের আকাশে তার ডানা মেলে আসছে। ইসলামী বিপ্লবের আগে ইরানের বহরে এ ধরনের বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার সংযুক্ত করা হয়। তবে বিপ্লবের পর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব রক্ষণাবেক্ষনের জন্য অতিরিক্ত যন্ত্রাংশ কিনতে বেগ পেতে হয় তেহরানকে। মূলত এ কারণে রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনায় পড়ে।
রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর ইরান সরকার জানিয়েছিল হার্ড ল্যান্ডিংয়ের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। হার্ড ল্যান্ডিং তখন বলা হয়, যখন বৈরি আবহাওয়া বা যান্ত্রিক ত্রুটি বা পাইলটের অদক্ষতার কারণে একটি হেলিকপ্টারকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গতিতে হঠাৎ অবতরণ করতে হয়। তাই স্পেয়ার পার্টসের অভাবে যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি এড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বেল ২১২ একটি মাঝারি আকারের হেলিকপ্টার। এই হেলিকপ্টারে ১৫টি আসন থাকে। এর মধ্যে পাইলটের জন্য একটি আসন এবং যাত্রীদের জন্য বাকি ১৪টি। জানা গেছে, রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারে তার সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আরও ৮ জন আরোহী ছিলেন। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় তাদের সকলেই নিহত হন।