ইরানে ঘটে যাওয়া বড় বড় বিমান দুর্ঘটনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২২ এএম, ২১ মে,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ১১:২৯ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। তার নিহতের ঘটনায় আবারও সামনে এসেছে ইরানের দুর্বল বিমান ব্যবস্থা। দেশটিতে অনেক আগে থেকেই বিমানখাতে দুর্বলতার প্রমাণ রয়েছে। এর আগেও বেশকিছু বড় বড় দুর্ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটি।
সোমবার (২০ মে) কাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ১৯৭৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ২৫৩টি বিমান দুর্ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছে ইরান। এতে দেশটির তিন হাজার ৩৩৫ জন নিহত হয়েছেন। জেনেভাভিত্তক ব্যুরো অব এয়ারক্রাফট এক্সিডেন্ট আর্কাইভসের বরাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১৯৮০ সালের ২১ জানুয়ারি ইরান এয়ারের একটি বোয়িং ৭২৭-১০০ বিমান তেহরানের আলবোর্জ রেঞ্জের একটি পাহাড়ের ঢালে আঘাত হানে। এ দুর্ঘটনায় ১২৮ জন যাত্রী নিহত হন।
দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়, অকার্যকর ইন্সট্রুমেন্ট ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস) এবং রাতের কারণে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়া ও প্রতিকূল আবহাওয়া।
১৯৮৬ সালের ৩ নভেম্বর ইরানের বিমানবাহিনীর একটি লকহিড সি-১৩০ হারকিউলিস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ওই সময় বিমানটি নূন্যতম নিরাপদ উচ্চতা থেকে সাড়ে ছয় হাজার ফিট থেকে নিচে চলে আসে এবং সিস্তান বেলুচিস্তান প্রদেশে এটি পাহাড়ের ঢালে আঘাত করে। এতে ১০৩ জন যাত্রীসহ সকলে মারা যান। এ সময় বিমানে ৯৬ জন সেনা ছিলেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চতা পরিমাপ করতে ব্যবহৃত অল্টিমিটারে একটি ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
১৯৮৮ সালের ১৩ জুলাই ইরানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। এদিন ইরান এয়ার পরিচালিত একটি এ৩০০ এয়াবাসে মার্কিন নৌবাহিনীর ক্রুজার ইউএসএস ভিনসেনেস থেকে ভুলক্রমে সামরিক বিমান ভেবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে করে বিমানের ২৯০ জন যাত্রী নিহত হন।
২০০২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ইরান এয়ারটুরের একটি টুপোলেভ টিইউ-১৫৪ বিমান খোরমাবাদে একটি পাহাড়ের ঢালে আঘাত হানে। বিমানটি তার গতিপথ থেকে ছিটকে পড়ায় বিষয়টি ক্রুরা বুঝতে না পারার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১১৯ আরোহী নিহত হন। তাদের মধ্যে চারজন স্প্যানিশ নাগরিক ছিলেন। প্রতিকূল আবহাওয়ায় দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এরপর ২০০৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) পরিচালিত ইলুশিন II-৭৬ সিরিজের একটি বিমান অবতরণের সময় পাহাড়ে আঘাত হানে। এ সময় বিমানের ২৭৫ জন যাত্রী নিহত হন।
২০০৯ সালের ১৫ জুলাই ক্যাস্পিয়ান এয়ারলাইন্স পরিচালিত একটি টুপলোভ টিইউ-১৫৪ বিমান অস্বাভাবিকভাবে নিচে নামতে থাকে এবং কাজভিনের একটি খোলা মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এ সময় বিমানের ১৬৮ যাত্রী নিহত হন। যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে দুঘটনার কবলে পড়ে এ বিমান।
এছাড়া ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ইউক্রেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স পরিচালিত একটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ বিমান উড্ডয়নের কয়েক মিনিটির মধ্যে ভূপাতিত হয়। ওই সময় বিমানটিতে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে বিমানের ১৭৬ যাত্রী নিহত হন। পরে এ ঘটনায় ভূল স্বীকার করে ইরান।