বিদ্যুৎ আমদানি
আদানির সঙ্গে চুক্তি সংশোধন চায় বাংলাদেশ : ভারত বললো ‘জড়িত নই’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:১০ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৯:৪০ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ভারতীয় জায়ান্ট আদানি গ্রুপের অঙ্গসংস্থা আদানি পাওয়ারের সঙ্গে কয়েক বছর আগে সই হওয়া বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি সংশোধন করতে চায় বাংলাদেশ। ঢাকা মনে করছে, ওই চুক্তিতে গৌতম আদানির কোম্পানিটি কয়লার দাম অনেক বেশি চেয়েছিল। এ কারণে সেটি কমাতে তৎপর হয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। সম্প্রতি বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি নজরে পড়েছে ভারত সরকারেরও। তবে তাদের দাবি, এই চুক্তির সঙ্গে ভারত সরকারের সরাসরি কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
আজ শুক্রবার ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, ঝাড়খন্ডের গোড্ডায় নির্মিত ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ২০১৭ সালে আদানি পাওয়ারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বিপিডিবি। চুক্তি অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত কয়লার দাম পরিশোধ করবে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এখন মনে করছে, চুক্তিতে গৌতম আদানির কোম্পানি কয়লার দাম অনেক বেশি উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশি এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে কয়লার উল্লেখিত দাম (প্রতি মেট্রিক টন ৪০০ মার্কিন ডলার) অত্যাধিক। এটি প্রতি মেট্রিক টন ২৫০ ডলারের নিচে হওয়া উচিত, যেমনটি আমরা আমাদের অন্য তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে আমদানি করা কয়লার জন্য দিচ্ছি।
তিনি বলেছেন, আমরা চুক্তি পুনর্বিবেচনার জন্য ভারতীয় কোম্পানিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
এদিকে আদানি পাওয়ার-বাংলাদেশের মধ্যকার ওই চুক্তির সঙ্গে ভারত সরকারের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং চুক্তি নিয়ে সাম্প্রতিক সমস্যাগুলো ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে মন্ত্রণালয়টির মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেছেন।
ডেকান হেরাল্ডের খবর অনুসারে, এদিন নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছে আদানি পাওয়ারের কয়লার দাম নিয়ে বাংলাদেশের অভিযোগের বিষয়ে ভারতের অবস্থান কী জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা।
জবাবে অরিন্দম বাগচি বলেন, আপনি একটি সার্বভৌম সরকার এবং একটি ভারতীয় কোম্পানির মধ্যকার চুক্তির কথা বলছেন। আমার মনে হয় না, আমরা (ভারত সরকার) এতে জড়িত।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, প্রতিবেশীদের সঙ্গে বৃহত্তর অর্থনৈতিক সংহতি এবং সংযোগ আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে। আমরা ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে আমাদের প্রতিবেশীদের লাভবান হওয়ার কথা বলেছি। আমরা যোগাযোগ সহজ করার চেষ্টা করেছি, তা সে শারীরিক হোক বা জ্বালানি বা বিদ্যুৎ।
ভারতীয় এ কর্মকর্তা বলেন, এটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ কৌশলের অংশ। এর অধীনে আমরা অবশ্যই বৃহত্তর অর্থনৈতিক আন্তঃসংযোগ, প্রকল্পগুলোর একীকরণ, বিনিয়োগ দেখতে চাই। তবে যদি একটি নির্দিষ্ট প্রকল্প আর্থিক বা অর্থনৈতিক কারণে কাজ না করে, আমার মনে হয় না সেটি সম্পর্কের প্রতিফলন হবে।
অরিন্দম আরও বলেন, বৃহত্তর অর্থনৈতিক বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সংযোগের মাধ্যমে কীভাবে দুই দেশকে আরও কাছাকাছি আনা যায়, তার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।