গণতন্ত্র সূচকে ‘মিশ্র শাসনের’ শ্রেণিতেই রয়েছে বাংলাদেশ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:০৮ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:৩০ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) গণতন্ত্র সূচকে ১৬৭ দেশের মধ্যে ৭৩ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ৫.৯৯। এর আগে ২০২১ এবং ২০২০ সালেও একই স্কোর ছিল বাংলাদেশের। ফলে এবারও আগের মতো ‘মিশ্র শাসনের’ শ্রেণিতেই রয়েছে বাংলাদেশ। ইআইইউ’র হিসেবে, কোনো দেশের স্কোর ৮ এর বেশি হলে সেই দেশে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়। স্কোর ৬ থেকে ৮ এর মধ্যে হলে সেখানে ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ বিদ্যমান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। অপরদিকে স্কোর যদি ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে হয় তাহলে সে দেশ ‘মিশ্র শাসনের’ অধীনে আছে বলে ধরে নেয়া হয়। বাংলাদেশ রয়েছে এই শ্রেণিতে। আর স্কোর ৪ এর নিচে হলে সে দেশে ‘স্বৈরশাসন’ বিদ্যমান বলে চিহ্নিত করা হয়।
২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। তবে বাংলাদেশ ২০২১ সালের হিসেবে দুই ধাপ এগিয়েছে।
যদিও গত তিন বছর ধরেই বাংলাদেশের স্কোর ৫.৯৯-এ আটকে আছে। পাঁচটি মানদ-ে একটি দেশের গণতন্ত্র পরিস্থিতি বিচার করে ইআইইউ শুক্রবার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ২০২১ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৭টি দেশের মধ্যে ৭৫ নম্বরে। এর আগে ২০২০ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫টি দেশের মধ্যে ৭৬ নম্বরে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫.৮৮ এবং অবস্থান ছিল ৮০ নম্বরে।
নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বহুদলীয় অবস্থান, সরকারে সক্রিয়তা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং নাগরিক অধিকার- এই পাঁচ মানদন্ডে একটি দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১০ ভিত্তিক এই সূচক তৈরি করে ইআইইউ। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ২০০৬ সালে যখন প্রথম এই সূচক প্রকাশ করে, তখন বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬.১১। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালে তা এক ধাক্কায় ৫.৫২ পয়েন্টে নেমে যায়। তারপর থেকে স্কোর বাড়লেও এখনও বাংলাদেশকে ‘হাইব্রিড রেজিম’ বা মিশ্র শাসনের শ্রেণিতেই রেখেছে ইআইইউ।
এদিকে এই সূচকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত ৪৬তম অবস্থানে রয়েছে, দেশটির স্কোর ৭.০৪। ৬.৪৭ স্কোর নিয়ে ৬০তম অবস্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। এই দুই দেশই দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের শ্রেণিতে জায়গা পেয়েছে। এরপরই এই অঞ্চলের মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে একই শ্রেণিতে রয়েছে নেপাল (১০১) ও পাকিস্তান (১০৭)। তালিকায় শীর্ষ পাঁচটি দেশ হল, নরওয়ে (স্কোর ৯.৮১), নিউ জিল্যান্ড (৯.৬১), আইসল্যান্ড (৯.৫২), সুইডেন (৯.৩৯) ও ফিনল্যান্ড (৯.২৯)। অর্থাৎ এই দেশগুলোর নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক সুবিধা ভোগ করে।
আর তালিকার সবচেয়ে নিচে থাকা দেশগুলো হচ্ছে- আফগানিস্তান (০.৩২), মিয়ানমার (০.৭৪), উত্তর কোরিয়া (১.০৮), সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (১.৩৫) এবং সিরিয়া (১.৪৩)। অর্থাৎ এই দেশগুলোর নাগরিকরা গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে প্রায় পুরোপুরি বঞ্চিত। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালে তাদের ভাষায় ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ ছিল ২৪টি দেশে, যা আগের বছরের চেয়ে তিনটি বেশি।
‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে এমন দেশের সংখ্যা আগের বছর থেকে পাঁচটি কমে ৪৮টি হয়েছে। আর ‘মিশ্র শাসনে’ আছে এমন দেশ ৩৪টি থেকে বেড়ে ৩৬টি হয়েছে। তাদের বিচারে বর্তমান বিশ্বে ৫৯টি দেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীনে রয়েছে; এই সংখ্যা আগের বছরের সমান। এই সূচকে পুরো বিশ্বের স্কোর এবার ৫.২৯, যা আগের বছর ৫.২৮ ছিল।