তারল্য ও জ্বালানি সংকটে পড়ছে পাকিস্তান
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:৩৮ পিএম, ৩১ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ০৯:৪৮ এএম, ৮ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
রুপির মান পড়ে গেছে। কমে গেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এ অবস্থায় আমদানিতে অর্থায়ন এবং পেমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তানি ব্যাংকগুলো। ফলে দেশটি ফেব্রুয়ারিতে ভয়াবহ জ্বালানি সংকটে পড়বে। ব্যবসায়ী ও কারখানা বিষয়ক সূত্রগুলো থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যালেন্স অব পেমেন্টে সংকটের মুখোমুখি দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি। একই সঙ্গে রুপির মান পতন হওয়ার কারণে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানি খাতে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে জ্বালানির দাম। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আমদানি করা প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করে পাকিস্তান তার বার্ষিক জ্বালানির কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করে। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর এই প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অস্বাভাবিক।
একটি তেল কোম্পানির সিনিয়র একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এখনই সংকট দেখা দেবে এমন না। এখনই যদি আমরা এলসি খুলতে না পারি, তাহলে আগামী এক পক্ষকাল পরে জ্বালানি সংকট হবে। যারা তেল রপ্তানি করেন তাদের কাছে দাম পরিশোধের একটি গ্যারান্টি হলো আমদানিকারক কর্তৃপক্ষের ব্যাংক থেকে দেয়া এলসি বা লেটার অব ক্রেডিট। বিদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মারাত্মক সংকটের কারণে পাকিস্তান এবং শ্রীলংকার মতো দেশকে এড়িয়ে চলছেন তেল ব্যবসায়ীরা। পাকিস্তানে রবিবার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম শতকরা ১৬ ভাগ বৃদ্ধি করে প্রতি লিটারের দাম করা হয়েছে ২৪৯.৮০ রুপি। পাশাপাশি তারা বন্ধ থাকা বেইলআউট প্যাকেজ চালু করার জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে আইএমএফের সঙ্গে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল শোধনকারী প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান স্টেট ওয়েল (পিএসও) এবং পাকিস্তান এলএনজি লিমিটেড জ্বালানির টেন্ডার থেকে সরে এসেছে কয়েক মাস। তেল বিষয়ক মহাপরিচালক ইমরান আহমেদের ১৯ জানুয়ারির এক চিঠি অনুযায়ী, আমদানিকারকরা যেসব আর্থিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, এ জন্য স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের কর্মকর্তারা এলসি খুলতে বিলম্বের জন্য মারাত্মক তারল্য সংকটকে উদ্ধৃত করেছেন।
এক মিটিংয়ে পিএসওর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, ১৩ই জানুয়ারি গ্যাসোলিন লোড করার কথা ছিল একটি কার্গোতে। কিন্তু এলসি খুলতে না পারায় তা বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে মজুদ খুবই সীমিত। এ অবস্থায় সহসাই সরবরাহ শেষ হয়ে যাবে। পাকিস্তানের রিফাইনারি, পাইপলাইন এবং কোম্পানিগুলোর মার্কেটিংয়ে প্রতিনিধিত্ব করে ওয়েল কোম্পানিজ এডভাইজরি কাউন্সিল (ওসিএসি)। তারা বলেছে, এলসি খুলতে বিলম্বের কারণে দেশে জ্বালানি সংকট দেখা দেবে। ১৩ই জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়কে ওসিএসি একটি চিঠি লিখেছে।
তাতে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে পাকিস্তানে ৪,৩০,০০০ টন গ্যাসোলিন, ২,০০,০০০ টন ডিজেল এবং ৬,৫০,০০০ টন অশোধিত তেল আমদানি করতে হবে পাকিস্তানে। স্থানীয় চাহিদা মেটাতে এ জন্য প্রয়োজন ১৩০ কোটি ডলার। ওসিএসি বলেছে, যদি সময়মতো এলসি খোলা না যায়, তাহলে গুরুত্বপূর্ণ পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ আমদানি বিঘিœত হবে। দেশে দেখা দেবে সংকট।