পুতিন বিশ্বাস করেন, তাঁর পক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধে হারা সম্ভব নয় : সিআইএ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১:২৬ এএম, ৯ মে,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৪৩ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মনে করেন, তাঁর পক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধে পরাজিত হওয়া সম্ভব নয়; বরং যুদ্ধের তীব্রতার মাত্রা আগের চেয়ে আরও বাড়াতে হবে। কিন্তু সেটা করতে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো লক্ষণ তাঁর মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। পুতিন সম্পর্কে এসব কথা বলেছেন মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক বিল বার্নস। খবর আল–জাজিরার।
গত শনিবার বিল বার্নস বলেন, রুশ সেনারা কিয়েভ দখল করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের দনবাসের প্রধান যুদ্ধক্ষেত্রগুলোয় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আনতে লড়াই করছে। এত কিছু সত্ত্বেও তাঁর বাহিনী ইউক্রেন সেনাদের হারাতে পারবে—পুতিনের এ বিশ্বাসে বদল আসেনি।
ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্টের মনোভাব সম্পর্ক বলতে গিয়ে সিআইএ প্রধান বলেন, প্রধান যুদ্ধক্ষেত্রগুলোয় পরাজয় সত্ত্বেও নিজের বাহিনীর প্রতি পুতিনের বিশ্বাসে ঝাঁকুনি লাগেনি।
বার্নস জানান, পুতিন এমন এক ধারণা নিয়ে আছেন, যেখানে তিনি যে হারতে পারেন, সেটা বিশ্বাসই করেন না। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আরও বলেন, ইউক্রেন নিয়ে কয়েক বছর ধরেই পুতিন ‘ভাপে সেদ্ধ’ হচ্ছিলেন।
বিল বার্নস বলেন, ইউক্রেনের সেনাদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়েও রাশিয়ান নেতার উৎসাহে ভাটা পড়েনি। কারণ, তিনি এ আক্রমণ চালাতে অনেকটা পণই করেছেন।
রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ছিলেন এই বার্নস। রাশিয়ান নেতাদের সম্পর্কে জানাশোনা করতে অনেক সময় ব্যয় করেছেন তিনি। ইউক্রেনে জয় পেতে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের কোনো নির্দেশনা মস্কো দেবে—সিআইএ এবং অন্য পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এমন ইঙ্গিত দেখছে না।
যদিও গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর কিছুক্ষণ পরই রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিকে সতর্ক অবস্থায় রাখে। তখন থেকেই পুতিন ও অন্য রাশিয়ান কর্মকর্তারা হুমকি দিয়ে রেখেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা হস্তক্ষেপ হলেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার হবে।
বার্নস বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে আমি কৌশলগত পারমাণবিক হামলা চালাতে রাশিয়ার কোনো পরিকল্পনা দেখছি না। তবে রাশিয়ার নেতৃত্ব থেকে যে ধরনের সামরিক হামলার হুমকি পাওয়া যাচ্ছে, সে আশঙ্কাগুলো আমরা হালকাভাবেও নিতে পারি না।’
ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বার্নস কোনো মূল্যায়ন করেননি। যুদ্ধ কীভাবে শেষ হতে পারে, তা নিয়েও কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করেননি।
সিআইএ প্রধান কথা বলেন চীন প্রসঙ্গেও, যারা এখন ওয়াশিংটনের প্রাথমিক প্রতিপক্ষ। বার্নস বলেন, চীন এখন ইউক্রেন যুদ্ধ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এটা তারা করছে তাইওয়ানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছা থেকে।
বার্নস বিশ্বাস করেন না যে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাইওয়ানকে একীভূত করার লক্ষ্য থেকে সরে এসেছেন; সেটা প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে হলেও। তবে বার্নস মনে করেন, ইউক্রেনে রুশ সেনাদের দুর্বল পারফরম্যান্স ও ইউক্রেনের প্রতিরোধ চীনের প্রেসিডেন্টকে অবাক করেছে। একইভাবে অবাক করেছে ইউক্রেনকে দেওয়া পশ্চিমা সামরিক সহায়তাও।
রাশিয়ার ‘ইউক্রেন অভিজ্ঞতা’ সম্ভবত তাইওয়ান নিয়ে চীনের হিসাব–নিকাশকে প্রভাবিত করেছে বলেও মনে করেন সিআইএ প্রধান। তিনি বলেন, পুতিন যা করেছেন, তা ইউরোপিয়ান ও আমেরিকানদের আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। এটা বেইজিংকে ‘অস্থির’ করে তুলেছে।