১২ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার চিঠি আমলে নিয়েছে জাতিসংঘ : ডোজারিক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৮:৩৮ পিএম, ২১ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৩৮ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কে নিষিদ্ধ করতে ১২ শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষে জাতিসংঘে পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গে সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা চিঠিটি দেখেছে, পড়েছে এবং এতে যে বিষয়টির (র্যাবের নিষেধাজ্ঞা) কথা বলা হয়েছে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি এবং র্যাবের নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে করা দুজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এভাবেই জাতিসংঘের জবাব তুলে ধরেন মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক।
ডোজারিক জানান, মানবাধিকার বিষয়টিকে জাতিসংঘ সবচাইতে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘনের দায়ে জাতিসংঘ মিশনে র্যাবের নিষেধাজ্ঞার যে দাবি উঠেছে পিসকিপিং ডিপার্টমেন্ট তা অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে দেখভাল করবে বলেও উল্লেখ করেন মহাসচিবের মুখপাত্র।
নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের স্থায়ী সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চানÑ ‘১২ শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘ মিশনে র্যাবের নিষেধাজ্ঞার যে দাবি উঠেছে সে বিষয়ে আমি পূর্বের সহকর্মী জেমসের (আলজাজিরার ডিপ্লোমেটিক এডিটর) করা প্রশ্নের সম্পূরক একটা প্রশ্ন করতে চাই। এই চিঠিতের রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস- এর প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি বলেছেন, ‘র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ এখন হাতেনাতে। জাতিসংঘের এ ব্যাপারে সীমারেখা টেনে দেয়ার সময় এসেছে।’ এ মন্তব্যের সঙ্গে আপনি কী একমত পোষণ করেন?’
জবাবে মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা চিঠিটি দেখেছি, পড়েছি এবং এতে যে বিষয়টি (মানবাধিকার লংঘন) কথা বলা হয়েছে সেটার দিকেই আমাদের মনোযোগ।’
তিনি আরও বলেন, ‘পিসকিপিং ডিপার্টমেন্টের আমাদের যে সহকর্মী বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সঙ্গে দেখভাল করেন। একই কারণে বিগত বছরগুলোতে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং যাচাই-বাছাই আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত ছিল।’ এর আগে ১২ মানবাধিকার সংগঠনের পাঠানো চিঠি, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উত্থাপন করেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরার কূটনৈতিক এডিটর জেমস বেইস।
তিনি জানতে চান, বাংলাদেশের বিশেষ বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কে শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাদ দিতে জাতিসংঘের পিসকিপিং অপারেশন-এর আন্ডার সেক্রেটারির কাছে চিঠি পাঠিয়ে আহবান জানিয়েছে ১২ মানবাধিকার সংস্থা। আপনি এটাও অবগত আছেন যে, বাংলাদেশের এই বাহিনীর ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ কী অবগত? কিংবা কোনো পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কী না?
জবাবে ডোজারিক বলেন, ‘আমরা যে চিঠিটা পেয়েছি সেটা খুব বেশি সময় হয়নি। আমরা আপনাকে যেটা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সেটা হলোÑ মানবাধিকার পরস্থিতি যাচাই-বাছাইয়ে জাতিসংঘ তার অবস্থান আরও দৃঢ় করেছে। সেটা যেকোনো দেশের যেকোনো বাহিনীই হোক। যা হচ্ছে তাকে আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি।’
মুখপাত্রের উত্তরের মধ্যেই সাংবাদিক জেমস আবার বলেন, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন যেটা বলছে এই বাহিনীকে (র্যাব) যদি এখনো মিশনে যুক্ত রাখা হয় তবে তা মানবাধিকার পক্ষে অবস্থান জোরালো থাকবে না। ডোজারিক বলেন, ‘আমি ইতিমধ্যে বলেছি। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’
উল্লেখ্য, শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) কে অবিলম্বে বাদ দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহবান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক ১২টি শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন। এর পূর্বেও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বাংলাদেশে অব্যাহত মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানিয়েছিল বিশ্ব সংস্থাটির নিকট। র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের ‘পিস অপারেশন’-এর আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জিন পিয়েরে ল্যাক্রোইক্স কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে ১২ শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা।
গত বৃহস্পতিবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।