

ইলিশ না থাকার প্রভাব অন্য মাছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৫ পিএম, ৭ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৩৫ এএম, ১৭ আগস্ট,রবিবার,২০২৫

প্রজনন মৌসুম হওয়ায় আজ শুক্রবার থেকে আগামী ২২ দিনের জন্য ইলিশ মাছ ধরা ও ক্রয়-বিক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির কারণে বাজারে ছিল না ইলিশ মাছ। চাহিদার শীর্ষে থাকা এ মাছ না থাকায় অন্য মাছে নির্ভর করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। যার প্রভাব পড়েছে অন্য মাছের দামে। তাতে সপ্তাহের ব্যবধানে বিভিন্ন মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা।
আজ শুক্রবার রাজধানীর শ্যামবাজার ও রায়সাহেব বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেড় কেজির বেশি ওজনের কাতলা ও রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা। আর এক কেজির কম ওজনের বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, যা সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ থেকে ৭০ টাকা বেশি। এছাড়া টাটকিনি, টেংরা ও মাঝারি আকারের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
বাজারের কম দামের মাছ হিসেবে পরিচিত তেলাপিয়া ও পাঙাশের দামও বেড়েছে। বড় আকারের পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে, আর একটু ছোট পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে। এসব মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
এদিকে নদীর মাছের দামও আকাশচুম্বী। পাবদা মাছ (বড়) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। ছোট পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে। এছাড়া বোয়াল, কই, শিং মাছের দাম বাড়ায় সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি কই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং আকারভেদে ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, কাতল ৩৮০ টাকা, শোল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, আইড় মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বিক্রেতাদের কাছে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কয়েকজন বলেন, বাজারে ইলিশ মাছ না থাকার কারণে অন্যান্য মাছের দাম একটু বেড়েছে। আর দেশি মাছের সরবরাহ কম থাকায়ও মাছের দাম একটু বাড়তি।
এর বাইরে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়াকে মাছের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারা।
মাছের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। কথা হয় বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী জুনায়েদ শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব মাছের দাম বেড়েছে। স্বল্প আয়ের লোকদের কিনে খাওয়ার মতো মাছ বাজারে নেই।
আরেক ক্রেতা ভ্যানচালক আহসান উল্লাহ বলেন, ‘আমরা তো আর দামি মাছ কিনে খেতে পারি না। পাঙাশ আর তেলাপিয়া আমাদের ভরসা। কিন্তু সেগুলোর দামও বেড়েছে। পাশাপাশি সবজিসহ সব খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের না খেয়ে মরার উপক্রম হয়েছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় আগে যেখানে এক কেজি তেলাপিয়া কিনতাম এখন সেখানে আধা কেজি নেই। আর বাসায় বলেছি মাছের টুকরা ছোট ছোট করতে।’
উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গতকাল থেকে আগামী ২২ দিনের জন্য ইলিশ ধরা, বাজারজাত ও ক্রয়-বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।