

আ'লীগের কারণে জনগণের কাছে পূর্ণিমার চাঁদ আজ ঝলসানো রুটি : প্রিন্স
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৯ এএম, ২২ মে,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:২৬ এএম, ১ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২৫

পদ্মা সেতুতে দাড়িয়ে পুর্ণিমার চাঁদ দেখতে জনগণের প্রতি ওবায়দুল কাদেরের আহ্বান প্রসঙ্গে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, পদ্মা সেতু দিয়ে যাতায়াতের সময় জনগণ সেতুতে আওয়ামী সরকারের দুর্নীতি -লুটপাটের কথা স্মরণ করবে আর সরকারের ব্যার্থতা-ভূলনীতিতে অভাব-অনটনে নাভিশ্বাসে বিপর্যস্ত--ক্ষুধার্ত জনগণের কাছে পূর্ণিমার চাঁদ আজ ঝলসানো রুটি ছাড়া কিছুই নয়। যারা দূর্নীতি লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে, তারা পূর্নিমার চাঁদ দেখে মধুচন্দ্রিমা পালন করতে পারেন, মানবেতর জীবনযাপনকারী জনগণের কাছে এসব কথা উপহাস ছাড়া কিছুই নয়।
গতকাল শনিবার (২১ মে) বিকেলে এমরান সালেহ প্রিন্স কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সম্মেলনেন তিনি বলেন, সরকার দেশকে ডুবিয়ে নিজেরা ডোবার আগে প্রতিপক্ষকে ডুবিয়ে মারতে চাচ্ছে। জনগণের ক্ষুব্ধতা দেখে সরকার চরম টেনশনে। তাই প্রতিনিয়ত প্রলাপ বকছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিডনাইট সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নির্মম
শিকার। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যেই তা প্রমানিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মাসেতুর উপরে তুলে পদ্মা নদীতে 'টুস' করে ফেলে দেয়া এবং নোবেল বিজয়ী ড.ইউনুসকে পদ্মার পানিতে চুবানি দেয়ার কথা বলে প্রধানমন্ত্রী নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি যে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মেরে ফেলতে চান, চরম ভাবে অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়াকে সু চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দিয়ে এবং পদ্মার পানিতে ফেলে দেয়ার বক্তব্য দিয়ে তা প্রমান করলেন।
ভৈরব পৌর শহরের জিল্লুর রহমান পৌর মিলনায়তনে ভৈরব উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলন উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এড.ওয়ারেস আলী মামুন। বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি লায়লা বেগম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি, রুহুল হোসাইন, শরীফুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদল খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া, নাজমুল আলম, আমিনুল ইসলাম আশফাক, যুব বিষয়ক সম্পাদক ভিপি সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল আলম, হানিফ উদ্দিন রনক, ভৈরব উপজেলা জাতীয় পার্টি (এরশাদ)' আহ্বায়ক আবদুস সালাম, কুলিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী রফিকুল ইসলাম, ভৈরব উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মোঃ শাহিন, সদস্য সচিব মজিবর রহমান, জেলা যুব দলের সভাপতি খসরুজ্জামান সুমন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক দলের উপজেলা সদস্য সচিব আরিফুল হক, পৌর সদস্য সদস্য সচিব মীর রাজন, শ্রমিক দলের উপজেলা আহ্বায়ক আদেলুজ্জামান দুলাল, পৌর আহ্বায়ক সিয়াম মিয়া, ছাত্রদলের উপজেলা আহ্বায়ক রেজোয়ান উল্লাহ, পৌর আহ্বায়ক হিসাম।
এর আগে মিলনায়তন চত্বরে জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে নেতৃবৃন্দ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ভৈরব উপজেলা ও পৌর ইউনিটের অন্তর্গত সকল ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে বিপুল সংখ্যক কাউন্সিলর ও ডেলিগেট ছাড়াও কয়েক হাজার নেতাকর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। মিলনায়তনে স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় নেতাকর্মীরা বাইরে সড়কে অবস্থান নিয়ে সম্মেলনের কার্যক্রমে অংশ নেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সর্ব সম্মতিক্রমে ভৈরব উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক পদে আরিফুল ইসলাম এবং ভৈরব পৌর বিএনপির সভাপতি পদে হাজী মোঃ শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক পদে মজিবুর রহমান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, সরকারের ব্যার্থতা, দূর্ণীতি-লুটপাট, অর্থ পাচার, ভূল নীতিতে দেশ ডুবিয়ে নিজেরাও ডুবতে বসেছে। এখন অন্যদেরকে ডুবানি-চুবানি দিয়ে দেশকে নেতৃত্ব শূন্য করতে চান তারা। ওবায়দুল কাদের সহ আওয়ামী লীগ নেতারা অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর প্রতিহিংসা পরায়ন চরিত্র আড়াল করতে এখন মিথ্যাচার শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী নেতা-নেত্রীদের কথায় মনে হচ্ছে পদ্মা সেতু তাদের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে তৈরী করা হয়েছে। বরং সেতু নির্মাণের নামে জনগণের ট্যাক্সের টাকা লুটপাট করা হয়েছে। এর দায়ে তাদেরকে একদিন কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
তিনি আরোও বলেন, আওয়ামী লীগ কাউকে সম্মান দেখাতে পারে না। সম্মানিত ব্যক্তিদের সম্মানহানি করতে তাদের জুরি নাই।
বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম বলেন, উন্নয়নের নামে মেগা দূর্ণীতি ও লুটপাট করে আওয়ামী লীগ দেশের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। তারা নিজেরা জনগণের টাকা অপব্যায় করে এখন জনগণকে মিতব্যয়ী হতে বলছে। এরা শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা নেয় নাই। তাদের অবস্থা আরও শোচনীয় হবে।
সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এড.ওয়ারেস আলী মামুন বলেন, পদত্যাগ না করলে গণ অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবী আদায় করা হবে। তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি চূড়ান্ত আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি জনগণকেও প্রস্তুত করার আহবান জানান।