হত্যা মামলার আসামী আসলেন প্রাইভেটে কারে, দিলেন পুলিশের হ্যান্ডমাইকে বক্তব্য!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২৩ পিএম, ৯ মার্চ,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:১৩ পিএম, ৫ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৫
হত্যা মামলার আসামীর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিজ্ঞ আদালত। এরপর কারাগার থেকে থানা পুলিশ রিমান্ডের আসামীকে প্রাইভেটে নিয়ে আসেন শৈলকুপা থানায়। থানায় পৌছানোর পর পুলিশের হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দিলেন বক্তব্য। এ সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, আমি আইনের আওতায় আছি। এই খুনের সঙ্গে আমি জড়িত নয়। এই দৃশ্য আবার স্যোশাল মিডিয়াতে লাইভ সম্প্রচার করে দলীয় নেতাকর্মীরা। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার। আর এমন সৌভাগ্যবান আসামী হলেন শৈলকুপা উপজেলার ১০ নং বগুড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুল। তিনি বড়বাড়ি বগুরা গ্রামের কুবাদ আলীর ছেলে।
জানা গেছে, আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দলে গত ৮ জানুয়ারী খুন হয় কল্লোল খন্দকার। এঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মিল্টন খন্দকার বাদী হয়ে গত ১২ জানুয়ারী ৮২ জনকে আসামী করে শৈলকুপা থানায় একটি হত্যা মামলা (মামলা নং ৩) দায়ের করেন। এই মামলায় মামলায় নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুলকে হুকুমের আসামী করা হয়। গত ২ মার্চ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ ৫ জন আত্মসমর্পন করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তৌফিক আসামীদের ৫দিনের রিমান্ড চাইলে বিজ্ঞ আদালত তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। হুকুমের আসামী যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ ৫জন গতকাল মঙ্গলবার(০৮ মার্চ ২২) সন্ধায় রিমান্ডে নেয়।
স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সন্ধ্যার পরপরই রিমান্ডের আসামীদের পুলিশের গাড়ির পরিবর্তে প্রাইভেট কারে শৈলকুপা থানায় আনা হয়। সম্বর্ধনার স্টাইলে আসামীদের কর্মী সমর্থকরা আগে থেকেই থানার মধ্যে ও বাইরে ভিড় জমায়। থানার মধ্যে ঢুকে তারা স্লোগানও দেয়। এসময় শৈলকুপা থানার ওসি (তদন্ত) মহসীন হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা টহল দিলেও কোনো বিধি নিষেধ আরোপ করেননি বলে অভিযোগ। এক পর্যায়ে ওসি (তদন্ত) মহসীন হোসেনের হাতে থাকা হ্যান্ডমাইক তুলে দেন রিমান্ডে থাকা আসামী চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শিমুলের হাতে। তিনি পুলিশ বক্সে দাঁড়িয়ে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। এদিকে রিমান্ডের আসামীদের নিয়ে পুলিশের এমন কর্মকান্ডে হতাশা আর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হত্যা মামলার বাদি নিহতের ছোট ভাই মিল্টন খন্দকার।
তিনি বলেন, এমন ঘটনা নজিরবিহীন। এ ঘটনায় আমরা ন্যায় বিচার পাবো বলে মনে করছি না।
বিষয়টি নিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তৌফিক জানান, আসামীদের কারো ব্যাক্তিগত গাড়িতে আনা হয়নি, গাড়িগুলো ভাড়া করা। পুলিশের হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করে বক্তব্য দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ওসি তদন্ত এবং থানা পুলিশ বলতে পারে।
শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, রিমান্ডের আসামী এভাবে বক্তব্য দিতে পারে না। আমি থানায় ছিলাম না। ঢাকা থেকে সকালে এসেছি। তবে যতটুকু শুনেছি তিনি তার এলাকার লোকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি থানায় এসেছেন পুলিশের গাড়িতে।
ঝিনাইদহ জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড. ইসমাইল হোসেন বলেন, রিমান্ডের কোন আসামীর স্বজনদের সাথে দেখা করতে পারলেও অন্য কারো সঙ্গে দেখা করার বিধান নেই ।




