মহানবী সা.-কে কটূক্তির প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে মুসল্লিদের বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫১ পিএম, ১০ জুন,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫৭ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা.-কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার কটূক্তির প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর মসজিদগুলোর সামনেসহ স্থানীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সমবেত হয়ে এর প্রতিবাদ জানান ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এসব সমাবেশে বক্তরা ভারতীয় পণ্য বর্জনসহ নবীজীকে অবমাননা করে বক্তব্যদানকারী বিজেপি নেতাদের শাস্তি এবং বিষয়টি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের দাবি জানান।
আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন :
আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, শুক্রবার বাদ জুমা আশুলিয়ার বিভিন্ন মসজিদ থেকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে নেমে আসেন মুসল্লিরা। এ সময় তারা বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে সমাবেশ করেন।
জুমার নামাজ শেষ করেই আশুলিয়ার বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক হয়ে বাইপাইলে অবস্থান করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় একে একে বাইপাইল পশ্চিমপাড়া, গাজীরচট, ভাদাইল, কাইচাবাড়ি, বাইপাইল দরগা মসজিদ, গাজীরচট ফকিরবাড়ি মসজিদ,বায়তুন নূর জামে মসজিদ, শ্রীপুর, তালপট্টি, বলিভদ্র বাজার মসজিদসহ আশপাশের বিভিন্ন মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে হাজার হাজার মুসল্লি খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন।
ধামরাই (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর ধামরাইয়ে সর্বস্তরের উলামা মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতা মিলিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলার চত্বর মঞ্চে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা মহানবী হজরত মোহাম্মদ সা.-কে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানিয়ে ভারতের পণ্য বর্জন করতে হবে বলেও জানান তারা।
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাস স্টেশনের সাভার সিটি সেন্টারের সামনে মহাসড়কের দু’পাশ বন্ধ করে জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ সমাবেশ করেন উলামা মাশায়েখ ও সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন রাসূলপ্রেমী হাজারো মুসল্লি।
ইসলামপুর (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, শুক্রবার বাদ জুমা শহরের ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মিলিত উলামা ও মুসল্লিদের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, জুমার নামাজ শেষে উপজেলা ইমাম, উলামা পরিষদ ও সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উদ্যোগে উপজেলার বাহিরগোলা জামে মসজিদের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাহিরগোলা মসজিদ চত্বরের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) সংবাদদাতা জানান, জুমার নামাজ শেষে পৌর শহরের কাঁটাবাড়ী জামে মসজিদ, নয়াপাড়া জামে মসজিদ, বাইতুন নূর জামে মসজিদের মুসল্লিরা ফেস্টুন হাতে বাংলা স্কুল মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি পৌর শহরের নিমতলা মোড়, বাস স্টেশন হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় কাঁটাবাড়ীতে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্থানীয় মুসল্লিরা বক্তব্য রাখেন।
ফরিদপুর সংবাদদাতা জানান, দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মুসল্লিরা বাদ জুমা শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল সহকারে শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ে সমবেত হন। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে মুজিব সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফরিদপুর প্রেস ক্লাবের সামনে শেষ করে। পরে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মুহুর্মুহু ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
সখীপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, মহানবী হজরত মোহাম্মদ সা.-কে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে সখীপুর মোখতার ফোয়ারা চত্বরে কওমী ওলামা পরিষদের আয়োজনে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, ধর্মপাশা উপজেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত তরিকত ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে জুমার পর উপজেলা পরিষদেএর সামনের সড়কে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেন। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ থেকে বিভিন্ন সংগঠনের হাজার হাজার মুসল্লি কটূক্তি নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার জিন্দালের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা জানান, জুমার নামাজ শেষে পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরের ইন্দুরকানী বাজারে এসে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন মসজিদ থেকে আগত মুসল্লিরা।
বিক্ষোভের একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা তাদের হাতে জুতা তুলে নেন। এ সময় ’নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিতে থাকেন। মিছিলটি ইন্দুরকানী বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রূপালী ব্যাংক চত্বরে একটি পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়।
পাইকগাছা (খুলনা) সংবাদদাতা জানান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় খুলনার পাইকগাছা পৌরসভা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে পৌরসভা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশে মুসল্লিরা মিলিত হন।
নোয়াখালী অফিস থেকে জানানো হয়, ভারতের ক্ষমতাসীন দলের দু’নেতা মহানবী সা.-কে কটূক্তির প্রতিবাদে ও তাদের গ্রেফতারের দাবিতে জুমার নামাজ শেষে নোয়াখালী শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে শত শত মুসল্লি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলগুলো শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এর আগে মহানবী সা.-কে অবমাননামূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে বাংলাদেশ 'ল' ইয়াস কাউন্সিল নোয়াখালী শাখার উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।
গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা জানান, শুক্রবার বাদ জুমা গফরগাঁও উলামা সমিতির উদ্যোগে রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়।
নাটোর সংবাদদাতা জানান, বাদ জুমা শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিরা মিছিল নিয়ে নাটোরের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এসে সমবেত হন। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে সরকারকে অবিলম্বে ভারতের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে হবে। এটা মূলত ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুদের মুসলমানদের বিরুদ্ধে চলা ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। এ সময় নূপুর শর্মা ও জিন্দালের ফাঁসির দাবিতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা স্লোগান দিতে থাকেন।
শেরপুর প্রতিনিধি প্রতিনিধি জানান, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও আয়েশা (রাঃ} সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালের কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বেলা ২টায় জেলার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজের পর মুসল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শেরপুর পৌর কেন্দ্রীয় ঈগাঁ মাঠে সমবেত হয়।
ইত্তেফাকুল উলামার সভাপতি শেরপুরের অষ্টিমতলা রাবেয়া বশরী মাদ্রাসার মুহ্তাহিম আব্দুল আজিজ এর নেতৃতে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মুহ্তাহিম আব্দুল আজিজ-এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শেরপুর মাই সাহেবা মসজিদের ইমাম মাওলানা মোস্তাসিন বিল্লাহ্, শেরপুর ফারুকিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রার মাওলানা আব্দুস সাওার, মুফতি মামুনুর রশিদ, মুয়াল্লিম সানিসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ তৌহিদী জনতার ব্যানারে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন এসব প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে। এসব সমাবেশে ভারতে মহানবী (সা.)কে কটূক্তির তীব্র নিন্দা জানানো হয়। আলোচনা শেষে সমাবেশ থেকে এক মিছিল নিয়ে বের হয়ে নিউমার্কেট পর্যন্ত যায়। পরে মোনাজাত এর মাধ্যমে বিক্ষোভ সমাবেশ সমাপ্তি করা হয়।
এই কর্মসূচি কেন্দ্র করে শেরপুর শহরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ । এছাড়াও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ডিবি, এন এস আই বিপুলসংখ্যক পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। এতে অংশ নেন অনেক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
শ্রীপুর (গাজীপুর সদর) প্রতিনিধি জানান, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে কটূক্তি করার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে গাজীপুরের শ্রীপুর। বাদ জুমা হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি মিছিল নিয়ে মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা ও জৈনা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে পৃথক স্থানে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন হাজার হাজার মুসল্লি। শুক্রবার বাদ জুমা উপজেলা জৈনা বাজার ও মাওনা চৌরাস্তায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আঞ্চলিক ইমাম ও ওলামা ঐক্য পরিষদের আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলে মিছিলে মহাসড়ক উত্তাল হয়ে উঠে।
মাওনা চৌরাস্তায় হযরত মাওলানা মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে মাওলানা ইকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন হযরত মাওলানা জামাল উদ্দিন, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা শহিদুল ইসলাম রংপুরী, মাওলানা খন্দকার নাসির উদ্দিনসহ বিভিন্ন মসজিদেও ইমামগণ। শ্রীপুর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারী এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ জানান।
এছাড়া জৈনা বাজারের বাইতুন আমিন জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম মুফীি হেদায়েতুল্লাহ রাহমানীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, হযরত মাওলানা ইয়াসিন হোসেন, মাওলানা আলমগীর হোসেন, মাওলানা ইসাহাক আল-ফরিদী, সীরাতুন্নবী সাঃ হাজী মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, মাওলানা আরিফ বিল্লাহ্সহ স্থানীয় বিভিন্ন মসজিদের ইমাম খতীবগণ।
আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে ভারতের বিজেপি দলের নেতাকর্মীদের কটূক্তির প্রতিবাদে ঢাকার আশুলিয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আশুলিয়ার মুসল্লিরা। এসময় আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়। শুক্রবার বাদ জুমা আশুলিয়ার বিভিন্ন মসজিদ থেকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে নেমে আসে মুসল্লিরা। এসময় তারা বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়ে সমাবেশ করে। জুমার নামাজ শেষ করেই আশুলিয়ার বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক হয়ে বাইপাইলে অবস্থান করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় একে একে বাইপাইল পশ্চিমপাড়া, গাজীরচট, ভাদাইল, কাইচাবাড়ি, বাইপাইল দরগা মসজিদ, গাজীরচট ফকিরবাড়ি মসজিদ,বায়তুন নূর জামে মসজিদ, শ্রীপুর, তালপট্রি, বলিভদ্র বাজার মসজিদসহ আশপাশের বিভিন্ন মসজিদ থেকে জুমার নাম শেষে হাজার হাজার মুসল্লি খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। এসময় তারা ভারতীয় পণ্য বর্জনসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।
সমাবেশে বক্তরা এসময় ভারতীয় পণ্য বর্জনসহ নবীজীকে অবমাননা করে বক্তব্য দানকারী বিজেপি নেতাদের শাস্তি এবং বিষয়টি জাতীয় সংসদে উত্থাপনের দাবি জানান মুসল্লিরা। পরে বিকেল তিনটার দিকে মুনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করে মুসল্লিরা মহাসড়ক থেকে চলে যায়। এদিকে, আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংহপুর, জিরানী বাজার, আশুলিয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মুসল্লিরা বিক্ষোভ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপির) মুখ্যপাত্র নূপুর শর্মা এবং বিজেপির দিল্লি মিডিয়া অপারেশন নবীন কুমার জিন্দাল হযরত মোহাম্মদ (সা:)কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করলে এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠে মুসলিম দেশগুলো।
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির দুই সিনিয়র নেতা নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দলের শাস্তির দাবিতে কুমিল্লাজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
জুমার নামাজের পরেই প্লেকার্ড-ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে নগরীর কান্দিরপাড়ে একত্রিত হন সাধারণ মুসুল্লিরা। স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে গোটা নগরী। তারা নুপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের শাস্তির পাশাপাশি ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহবান জানান।
তৌহিদী জনতার ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর কান্দিরপাড় থেকে শুরু হয়। জিলা স্কুল শিল্পকলা একাডেমী হয়ে নগরীর পুলিশ লাইন এলাকা হয়ে টাউনহলে এসে মিলিত হন।
তৌহিদী জনতার ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত মাওলানা মনিরুল ইসলাম কাসেমী বলেন, প্রিয় নবীর প্রতি কটূক্তি আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। আমরা তাদের বিচার চাই।
মুফতি শামসুল ইসলাম বলেন, ইতিহাস সাক্ষী যারা যখনই মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে তারা লাঞ্ছিত হয়েছে, অপমানিত হয়েছে।
কাদেরিয়া ইসহাকিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তে আরেকটি বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত আক্তার হোসেন নামে একজন বলেন, আমরাতো কারো ধর্ম নিয়ে কথা বলি না। তাহলে কেন নুপুর শর্মা, জিন্দাল আমাদের নবীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে। আজ তারা আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি নুপুর শর্মা ও জিন্দাল ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে পুরো বিশ্বে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। তাদের যথাযোগ্য শাস্তি হওয়া উচিত।
এদিকে বিক্ষাভরত মুসলমানরা যেন শান্তিপূর্ণভাবেই তাদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল শেষ করতে পারে সে জন্য নগরীজুড়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন ছিলো বলে জানান কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহিদুর রহমান। পুলিশ কর্মকর্তা সহিদ আরো জানান, বিক্ষোভের সময় কুমিল্লার কোথাও কোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।
দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, ভারতে বিজেপি নেতা নুপুর শর্মা ও নবীন জিন্দাল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.) কে নিয়ে কটূক্তিমূলক বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে ঢাকার দোহার উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ জুন শুক্রবার সকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দোহার শাখার আয়োজনে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি উপজেলার জয়পাড়া ওয়ান ব্যাংক হতে শুরু হয়ে রতন চত্বর, থানার মোড়, করম আলীর মোড় হয়ে পুনরায় ওয়ান ব্যাংক মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
বক্তারা বলেন, যারাই নবীজীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, অপমানজনক কথাবার্তা বলবে তাদের বিরুদ্ধে মুসলমানেরা সবসময় প্রতিবাদ করবে। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আমরা নবীজীর সম্মান রক্ষা করবো।
উপস্থিত সকলে নুপুর শর্মা ও নবীন জিন্দালের কঠিন বিচারের দাবির পাশাপাশি বাংলাদেশে সরকারকে জাতীয় সংসদে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ দোহার থানা শাখা সভাপতি আলহাজ হাফেজ মো. ইসমাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. সুলাইমান বেপারী, সাংগঠনিক সম্পাদক, মাওলানা যুবায়ের আহমাদ সাকী, পৌরসভা সভাপতি, আলহাজ মো. আজম খান, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মিজানুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, ইসলামি যুব আন্দোলনের থানা সভাপতি হাফেজ মতিউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন হাওলাদার, ইসলামি শ্রমিক আন্দোলন দোহার থানা সভাপতি মোশাররফ হোসেন শামীম, সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা আব্দুল আজিজ, ইসলামি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ দোহার থানা সহ-সভাপতি মো. হাফিজুল ইসলাম, সেক্রেটারি আব্দুর রহমান মোল্লা, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ দোহার থানা সভাপতি মাওলানা আব্দুল গফফার আল ফরিদী, সেক্রেটারি হাফেজ মাওলানা ওমর ফারুকসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, ভারতে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাংলাদেশ আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামাত ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর উদ্যোগে বর্ণাঢ্য বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার বাদ জুমা বিভিন্ন মসজিদ থেকে আসা মুসুল্লিদের কন্ঠে ‘নারায়ে তাকবীর 'আল্লাহ আকবার' 'নুর নবীর অপমান সইবে নারে মুসলমান' ধ্বনি নিয়ে বাংলাদেশ আহলে ছুন্নাত ওয়াল জামাত কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মাওলানা মো. আবদুছ ছাত্তার মোজাদ্দেদী, উপজেলা সভাপতি মাওলানা মো. আল-আমিন দেওয়ান আল-আবেদী ও অর্থ সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য বিক্ষোভ মিছিল উপজেলার বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।
বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত উপজেলা সভাপতি মাওলানা মো. আল-আমিন দেওয়ান আল-আবেদীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মো. আওলাদ হোসেন-এর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হিজবুর রাসুল (সাঃ) উপজেলা সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মো. রেজাউল করিম ভূইয়া, বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আলী হোসেন ভূইয়া ও বাংলাদেশ হিজবুর রাসুল (সাঃ) উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন।
একই সময়ে কালিগঞ্জ ওলামা পরিষদের সভাপতি মাও. হাফেজ মো. আব্দুল হাফিজ, মুফতী ইমদাদুল হক, মাও. আবু হানিফ ও কালীগঞ্জ দড়িসোম বাইতুস সালাম জামে মসজিদের ঈমাম মাও. মো. মাহমুদুল হাসান, সভাপতি মো. নায়েবুর রহমান মাসুদ ও এর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলার বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মুক্তমঞ্চে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।
অন্যদিকে বিকালে কালীগঞ্জ কওমী ওলামা পরিষদ ও কালীগঞ্জ ইমাম পরিষদের যৌথ উদ্যোগে কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে এক বর্ণাঢ্য বিক্ষোভ মিছিল কালীগঞ্জ কওমী ওলামা পরিষদের মহাসচিব মাও. গাজী মো. রুহুল আমিন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. মীর মোফাজ্জল হোসেন, কালীগঞ্জ ইমাম পরিষদের সভাপতি মাও. ইসমাইল হোসেন মির্জা, সহ-সভাপতি মাও. গাজী আশিক আহমদ, মাও. কামরুল ইসলাম গাজীপুরী, সাধারণ সম্পাদক মাও. রুহুল আমিন গাজীপুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. শরীফ আহমদ এর নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেষ হয়। এছাড়া জামালপুর ইউনিয়নের বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় চুপাইর ও দোলান বাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে এলাকাবাসী। এছাড়া উপজেলার তুমলিয়া, বক্তারপুর, মোক্তারপুর, বাহাদুরসাদী, নাগরী, জাঙ্গালীয়া ইউনিয়নেও বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে তৌহিদী জনতা।
প্রতিবাদ সভায় বক্তাগণ বলেন, বিশ্ব মুসলমানদের হৃদয়ের স্পন্দন মহানবী (সা.)কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য কোন মুসলমানই মেনে নিতে পারে না। এসময় তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানানোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতীয় একটি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার স্ত্রী আয়েশা (রা.) সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দেন নূপুর শর্মা। পরে একই বিষয়ে টুইটারে পোস্ট দেন নাভিন কুমার জিন্দাল। এ নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশ প্রতিবাদ জানায়।
খাগড়াছড়ি স্টাফ রির্পোটার জানান, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও মিডিয়া সেল প্রধান নবীন জিন্দাল -প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সঃ) এবং উম্মাহাতুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) কে নিয়ে অশালীন ও অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে রাঙ্গামাটি, বান্দবান ও খাগড়াছড়ির জেলা সদরসহ সকল উপজেলায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে তৌহিদী জনতা ও ওলামা ঐক্য পরিষদ।
শুক্রবার (১০ জুন) জুমার নামাজের পর গুইমারা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, মুসলিমপাড়া জামে মসজিদ, জালিয়াপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, সিন্দুকছড়ি জামে মসজিদসহ উপজেলা বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লীরা খাগড়াছড়ি চট্টগ্রাম মহাসড়কে পুলিশ বক্স এর সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে জড়ো হয়।
মাওলানা সাইফুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ওসমানী গণী, জালিয়াপাড়া কেন্দ্রী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মুফতি নোমান,হাফছড়ি মাদ্রাসার পরিচালক আমীনুল ইসলাম প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ওসমান গণী বলেন, ”মহানবীর বিরুদ্ধে কটূক্তি কারিরা ইসলামের দুশমন। মহানবীকে নিয়ে কটূক্তিকারী ভারতের বিজিপি নেতাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ এবং ভারতকে কটূক্তিকারীদের শাস্তির দাবি জানানোর দাবি জানাচ্ছি। মহানবীর উম্মতদের সাথে নিয়ে জোটবদ্ধভাবে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সম্মান রক্ষায় কাজ করবো। মহানবীর সাথে বেয়াদবি করার ফল আল্লাহর তরফ থেকেই বেয়াদবরা ভোগ করবে।
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি জানান, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের স্পন্দন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুই নেতার কটূক্তির প্রতিবাদে সাভার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সাধারণ মুসল্লিরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
শুক্রবার দুপুরে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড, গেন্ডা, থানা বাসস্ট্যান্ড, শিমুলতলা, রাজাশন, ব্যাংক কলোনী এলাকার বিভিন্ন মসজিদ থেকে জুমার নামাজের শেষে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মহাসড়কে কটূক্তির প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভ শেষে সকলে একত্রিত হয়ে সাভার সিটি সেন্টারের সামনে সমাবেশ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে মুসল্লিরা অভিযোগ করে বলেন, ধর্মীয় অপবাদ ছড়িয়ে ভারতের বিজেপি একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। তাদের এমন কর্মকান্ড গোটা ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের স্পষ্ট পাঁয়তারা। এছাড়া তারা সম্প্রীতির বাংলাদেশে হিন্দুত্ব-বাদী গোষ্ঠীকে উসকে দিয়ে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে বিদ্যমান পারস্পারিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, সারা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, মুসলিম উম্মাহর ইজ্জত রাসুল (সা.) সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য কোনো মুসলমানই মেনে নিতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারকে এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিন্দা জানানোর আহ্বান করেন মুসল্লিরা।
এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকেলে একই দাবিতে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দু'জন নেতা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সাভারের লিজেন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছাত্রদের পরীক্ষা শেষে উক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা সাভার সিটি সেন্টারের সামনে একত্রিত হয়। এরপর স্লোগান করতে করতে পাকিজার সামনের কাটা দিয়ে শিমুলতলা হয়ে পুনরায় সিটি সেন্টারের সামনে এসে এ কর্মসূচি সমাপ্ত করে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতীয় একটি টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার স্ত্রী আয়েশা (রা.) সম্পর্কে অবমাননাকর বক্তব্য দেন নূপুর শর্মা নামে এক বিজেপি নেতা। পরে একই বিষয়ে টুইটারে পোস্ট করে নাভিন কুমার জিন্দাল নামে আরেক নেতা। এ নিয়ে ভারতীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিশ্বব্যাপী এ বিষয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আরব আমিরাত ভারতীয় পণ্য বয়কট করে। বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশও এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে নিয়ে ভারতে বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা ও দিল্লী শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন কুমার জিন্দালের কটূক্তির প্রতিবাদে ময়মনসিংহের ভালুকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ধর্মপ্রান মুসল্লিরা। ভালুকা ইমাম ওলামা পরিষদের উদ্যোগে জুমার নামাজ শেষে মিছিল আহ্বান করা হলে উপজেলা সদরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে জুমা নামাজ শেষে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে মুসল্লিরা ভালুকা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে এসে জড়ো হয়। পরে এক সাথে এক বিশাল মিছিল সদরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে স্মৃতিসৌধে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি’র বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু। ভালুকা ইমাম ওলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি আঃ মজিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওঃ মামুনুর রশিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাও.মতিউর রহমান,মুফতী আলমগীর কাসেমী,মাও. মোঃ কুতুবউদ্দিন, মাও. সাইফুল ইসলাম, মুফতি আমানউল্লাহ,মুফতি মোঃ শাহজাহান, মাও. সাখাওয়াত,মাও. রোকন উদ্দিন,মাও. এহসানুল হক,মাও. ওমর ফারুক, মাও.ফজলুল করিম, মৌলভী মিজানুর রহমান প্রমুখ। বক্তাগণ মহানবীকে নিয়ে বিজেপি নেতাদের মন্তব্যকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও ধর্মীয় অনভূতিতে আঘাত উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। বক্তাগণ রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি সংসদে তাদের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহন করার দাবি করেন। বক্তাগণ বলেন, মহামানব ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এঁর চরিত্র নিয়ে তাঁর সময়ে বিরোধিতাকারী আবু জাহেল গংরাও কটূক্তি করার সাহস করেনি। উল্টো প্রশংসা করেছে। বক্তাগণ অবিলম্বে বক্তব্য প্রত্যাহারপূর্বক বিশ^বাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে তওবা করার জন্য বিজেপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দু’নেতা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে কটূক্তি করার প্রতিবাদে পাইকগাছায় বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় পৌরসভা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিল শেষে পৌরসভা চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পৌর ইমাম পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাওলানা মোঃ শহিদুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদিরের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন মাওলানা রাইসুল ইসলাম, গাজী জুনায়েদুর রহমান, মোঃ শামসুদ্দিন, মোঃ আবু সাদেক, সাইদুল ইসলাম, ইব্রাহিম খলিল, গোলাম রাব্বানী, মোঃ আব্দুল্লাহ, আব্দুল মালেক, আব্দুস সালাম, মোঃ ওলিউল্যাহ, মনিরুল ইসলাম, মুজিবুর রহমান, আব্দুল হাই, হারুন অর-রশিদ, আব্দুল মান্নান, আব্দুল হক, হাবিবুল্লাহ, কামরুল হুদা, মোঃ আব্দুর রশিদ, আকবার আলী, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোস্তফা কামাল, সাইদুজ্জামান, আব্দুস সাত্তার, আব্দুর রকিব, মনিরুল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম তুহিন প্রমুখ।
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে অবমাননা, কটূক্তি ও ব্যঙ্গ করার প্রতিবাদে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে প্রতিবাদ সমাবেশ, মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বাদ জুমা পৌর এলাকার আজাদমোড়ে এই কর্মসূচি পালিত হয়। ‘সকল মুসলিম উম্মা’র ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের আজাদমোড়ে মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিবাদ মিছিল আজাদমোড় থেকে বের হয়ে বাসস্ট্যান্ড, থানা মোড়, পুরাতন বাজার ও কালিতলাসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে আজাদমোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ৬ শতাধিক মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। প্রতিবাদ থেকে বক্তারা মুহাম্মাদ (সাঃ) কে অবমাননা করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সেই সাথে কটূক্তিকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে সকলকে নিজ নিজ ধর্ম শান্তিপূর্ণভাবে পালনের আহ্বান করেন।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দুজন নেতা নূপুর শর্মা ও নবীন কুমার মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কে কটূক্তি করে। এর পরেই দেশ-বিদেশে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।