সর্বাত্মক কর্মবিরতি অব্যাহত রাখবেন শিক্ষকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১০ পিএম, ১৫ জুলাই,সোমবার,২০২৪ | আপডেট: ০২:০৬ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলমান থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসায় চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে। রবিবার (১৪ জুলাই) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আকতারুজ্জামান ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিববৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শনিবার (১৩ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিরা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন, এরপর আজ রবিবার আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপ জানালেন শিক্ষকরা।
তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃত্বে গত মার্চ মাস থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তিনটি যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। যার ধারাবাহিকতায় গত ১ জুলাই থেকে শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেন। সরকারের পক্ষ থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি আলোচনার আমন্ত্রণ জানান। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৩ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে শনিবার (১৩ জুলাই) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার এমপি, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। শিক্ষক প্রতিনিধিরা তাদের একটি লিখিত বক্তব্য ওবায়দুল কাদেরের কাছে হস্তান্তর করেন।
গতকালের আলোচনার পর আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ফেডারেশনের সঙ্গে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধিদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শিক্ষক নেতারা গতকালের আলোচনার বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন। তিন দফা দাবি পূরণে এখনও সুস্পষ্ট কোনও ঘোষণা না আসায় চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দেন তারা। পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে ফেডারেশনের নেতাদের সুপারিশ করেন।
প্রত্যয় স্কিম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার করে অতিদ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য উচ্চতর স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো দিতে কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি ও ২০১৫ সালে প্রতিশ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবায়ন- এই তিনটি দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন তারা। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।
উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ অর্থ বিভাগ ‘প্রত্যয়’ স্কিম চালুর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত ১ জুলাই থেকে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা ‘প্রত্যয়’ স্কিমে স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যেসব শিক্ষকরা ১ জুলাই থেকে নিয়োগ পাবেন তারা এই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত হবেন। তবে বিদ্যমান শিক্ষকরা এর আওতার বাইরেই থাকবেন। এর প্রতিবাদে গত ১ জুলাই থেকে ক্লাস, পরীক্ষা ও সব দাফতরিক কাজ বন্ধ করে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে চলে যাওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।