প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে স্থান পেল হাবিপ্রবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২০ পিএম, ১৩ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৬:০২ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ এর ইমপ্যাক্ট র্যাংকিং (২০২৪) এ প্রথমবারের মতো স্থান পেয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)।
বুধবার (১২ জুন) এই র্যাংকিং প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সামগ্রিক র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ১৫০১+ তম। র্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা ও কম নম্বর পেয়েছে লিঙ্গ সমতা সূচকে।
জাতিসংঘের মোট সতেরটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যকে ভিত্তি হিসেবে ধরে এই র্যাংকিং প্রকাশ করা হয়েছে। এসব সূচক এর মধ্যে রয়েছে- নো পোভার্টি, জিরো হাঙ্গার, গুড হেলথ এন্ড ওয়েলবিং, কোয়ালিটি এডুকেশন, জেন্ডার ইকুয়ালিটি, ক্লিন ওয়াটার এন্ড স্যানিটেশন, অফ ডল এন্ড ক্লিন এনার্জি, ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইকোনমিক গ্রোথ, ইন্ডাস্ট্রি ইনোভেশন এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার, রিকোয়ার্ড ইনেকুয়ালিটিস, সাসটেইনেবল সিটিজ এন্ড কমিউনিটিস, রেসপন্সিবল কনসামশান এন্ড প্রোডাকশন, ক্লাইমেট চেঞ্জ, লাইফ বিলোওয়াটার, লাইফ অন ল্যান্ড, জাস্টিস এণ্ড স্ট্রং ইন্সটিটিউশন্স এবং পার্টনারশিপ ফর দ্যা গোলস। র্যাংকিংয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৭নং এসডিজি (পার্টনারশিপ ফর দ্যা গোলস) কে বাধ্যতামূলক ধরে আরও কমপক্ষে তিনটি সূচকে তথ্য পাঠাতে হয়েছে। হাবিপ্রবি ১৭নং সহ ২নং (জিরো হাঙ্গার), ৪নং (কোয়ালিটি এডুকেশন) এবং ৫নং (জেন্ডার ইকুয়ালিটি) এসডিজি তে আবেদন করে।
র্যাংকিং থেকে দেখা যায়, বাধ্যতামূলক ১৭নং এসডিজিতে হাবিপ্রবির অর্জিত নম্বর ৩৬.৯-৫২.৮। একইভাবে ২নং এসডিজি তে ৪৬.৯-৫৪.৩; ৪নং এ ২৫.৭-৪৪.১ এবং ৫নং এ ২.২-৩৫.২ নম্বরপ্রাপ্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্বিবদ্যালয়টির আবেদন করা ২নং (জিরো হাঙ্গার) এসডিজি গুরুত্ব দেয় ক্ষুধা অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টি অর্জন এবং টেকসই কৃষি প্রচারের ওপর। ৪নং (কোয়ালিটি এডুকেশন) এর মধ্যে আছে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ন্যায়সঙ্গত মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং সকলের জন্য আজীবন শিক্ষার সুযোগ উন্নীতকরন। ৫ নং (জেন্ডার ইকুয়ালিটি) এসডিজিতে দেখা হয় যথাক্রমে লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং সকল নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন। এছাড়াও বাধ্যতামূলক ১৭নং এসডিজি (পার্টনারশিপ ফর দ্যা গোলস) তে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় বিভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের উপায়গুলিকে শক্তিশালীকরন এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্বকে পুনরুজ্জীবিতকরন এর ওপর।
হাবিপ্রবিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতির জন্য গত বেশ কিছুদিন ধরেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়কে র্যাংকিংভুক্ত করতে অধ্যাপক ড. মো. নাজিম উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. কামরুজ্জামান। এছাড়াও মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক আসাদুজ্জামান বাবু কমিটির কাজে সহযোগিতায় ছিলেন।
প্রথমবারের মতো টাইমস হায়ার এডুকেশনে স্থান পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাবিপ্রবির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য মহোদয় প্রতিটি বিষয়ে অনেক আন্তরিক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বপরিমন্ডলে তুলে ধরার জন্য ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে হাবিপ্রবি টাইমস হায়ার এডুকেশনসহ অন্যান্য র্যাঙ্কিংয়ে ভালোভাবে স্থান করে নিবে। তবে এক্ষেত্রে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা দরকার।
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড.মো. মাহাবুব হোসেন বলেন, ভিসি স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। তারই নির্দেশনায় হাবিপ্রবি আজ বিশ্ব পরিমন্ডলে স্থান করে নিলো। হাবিপ্রবির এমন অর্জন আমাদের ভবিষ্যতে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা দিবে।
উল্লেখ্য যে, দেশের সরকারি-বেসরকারি মোট ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় এবারের র্যাংকিংয়ে স্থান পেয়েছে। বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় স্থানে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং তৃতীয় স্থানে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)।