বুয়েট শিক্ষক নিখিলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৩ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:৫১ এএম, ৭ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
সরকারি ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রে নাম আসার পর বুয়েট শিক্ষক নিখিল রঞ্জন ধরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম শহীদুল ইসলাম রবিবার সম্পূরক অভিযোগপত্র গ্রহণ করে নিখিলকে গ্রেফতারের আদেশ দেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই জানান।
আসামিকে গ্রেফতার করা গেল কি না, তা জানাতে তার বাড়ি যশোরের কেশবপুর থানার ওসিকে আগামী ৯ মার্চের মধ্যে পরোয়ানা তামিল প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন বিচারক। গত ২৪ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমার পরদিন ঢাকার মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম সেখানে নিখিল রঞ্জনকে আসামি না করার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কাছে তিনি জানতে চান, অভিযোগপত্র থেকে বুয়েট শিক্ষক অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরকে কেন, কীভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে আরও তদন্ত করে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক।
এরপর ৩১ জানুয়ারি অধ্যাপক নিখিলের নাম অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে অভিযোগেপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শামীম আহমেদ। তার ভাষ্য, ওই মামলায় গ্রেপ্তার অন্য আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতনদের অনুমোদন নিয়ে অধ্যাপক নিখিল রঞ্জনের নাম এবার অভিযোগপত্রে দেওয়া হয়েছে।
আদালত প্রশ্ন তোলার পর অভিযোগপত্রে অধ্যাপক নিখিলের নাম:
অথচ সরকারি পাঁচ ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় করা এই মামলার এর আগে অধ্যাপক নিখিল রঞ্জন ধরকে বাদ দিয়েই অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন তিনি। গত ২৫ জানুয়ারি ডিবির এই কর্মকর্তা বলেছিলেন, আসামি দেলোয়ার হোসেনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি যাচাই-বাছাই করে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় অধ্যাপক নিখিলের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ বা অভিযোগ তিনি ‘পাননি’। “নিখিল ধর আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে মুদ্রিত প্রশ্নপত্রের কোনো কপি পাননি। দেলোয়ার হোসেন তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানান।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির আওতায় ২০২১ সালের ৬ নভেম্বর ঢাকায় বিভিন্ন কেন্দ্রে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকে অফিসার (ক্যাশ) নিয়োগের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। এক হাজার ৫১১টি পদের বিপরীতে ওই পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ১৬ হাজার ৪২৭ জন। পরীক্ষা শেষে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তোলেন পরীক্ষার্থীরা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্তে নেমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পাওয়ার কথাও জানায়। পরে ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
প্রশ্ন ফাঁস করে উত্তর বিক্রির অভিযোগে আহছানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক দেলোয়ার হোসেন, পারভেজ মিয়া ও প্রেসকর্মী রবিউল আউয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদে ‘চাঞ্চল্যকর’ তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছিল ডিবি। ওই তদন্তেই বুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান নিখিল রঞ্জন ধরের নাম পাওয়ার কথা জানান ডিবির কর্মকর্তারা। পরে ২১ নভেম্বর ওই বিভাগের প্রধানের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দিয়ে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করে বুয়েট প্রশাসন।