ছাত্রলীগের বাধায় ইবির নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৯ এএম, ২২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:০১ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ছাত্রলীগের বাধার মুখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট’ পদে টাইপিং দক্ষতা পরীক্ষার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিকেলে একই পদে ওই বিভাগসহ আরো কয়েকটি বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯ টায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ২৪ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় আইকিউএসি, ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯ টায় ফাইন আর্টস বিভাগ এবং বেলা ১২.০০ টায় ম্যাস-কমিউনিকেশন এন্ড জার্নালিজম বিভাগ- এর ‘‘অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার টাইপিস্ট” পদে অনুষ্ঠিতব্য টাইপটেস্ট গ্রহণ অনিবার্য কারণবশতঃ স্থগিত করা হলো। টাইপটেস্ট গ্রহনের তারিখ ও সময় পরবর্তীতে জানানো হবে।
সূত্র মতে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট’ হিসেবে ১টি পদের বিপরীতে ২৬৬জন প্রার্থীকে টাইপটেস্ট’র জন্য আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে ৯টায় পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে উপস্থিত হন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষা বোর্ডের আহবায়ক ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান ও সদস্য সচিব ছিলেন উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) চন্দন কুমার দাস। এছাড়া বিশেষজ্ঞ সদস্য ছিলেন আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরীক্ষার সময়ে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কিছু নেতাকর্মীরা এসে বাঁধা প্রদান করেন এবং পরীক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেন। পরে পরীক্ষার আহবায়ক এইচ এম আলী হাসান সেখান থেকে চলে যান। পরে পরীক্ষার্থীরা বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও পরীক্ষা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিকেলে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষাসহ আগামী ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর আউকিউএসি ও ফাইন আর্টস বিভাগ এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক পরীক্ষার্থী।
তারা বলেন, প্রশাসন চাইলে পরীক্ষা নিতে পরতো কিন্তু এবিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। অনেক দূর থেকে কষ্ট করে এসে পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হচ্ছে। তাই আমরা নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছি।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, যারা পরীক্ষা স্থগিত করেছে তারা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী, তারা দীর্ঘদিন থেকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে কাজ করে আসছিল। বর্তমান কমিটির কেউ সেখানে ছিল না।
নিয়োগ পরীক্ষার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, আমি পরীক্ষাস্থলে যাওয়ার আগেই শুনলাম কিছু ছেলেপেলে পরীক্ষা নিতে বাঁধা দেওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, অনিবার্য কারণবশত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। এর বাইরে আমার আর কিছু বলার নেই।
এ বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, কিছু ছাত্রনামধারী দুষ্কৃতকারী পরীক্ষায় বাঁধা দিয়েছে। আমাদের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাবো।