মধ্যরাতে কুবি ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত- ১০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৫ এএম, ১০ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪২ পিএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ছাত্রলীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে রুপ নিয়েছিলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ জড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
সংঘর্ষ আহত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত মো: সায়েম, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী ইকবাল, রাকিব, অনুপ দাশ, সোহাগ, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সাকিব হাসান দীপ, আশরাফুল রায়হানসহ দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দু’হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় নজরুল হলের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করে বঙ্গবন্ধু হলের এক ছাত্রলীগকর্মী। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় দু’হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় লাঠি, রড, দেশীয় অস্ত্র হাতে দেখা দেখা যায় একাধিক ছাত্রলীগ কর্মীকে।
পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করা চেষ্টা করে এবং নেতাকর্মীদের হলে ফিরিয়ে নেয়।
জানতে চাইলে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হলের ৩০০ থেকে ৪০০ পোলাপাইন আমাদের হলে এসে হামলা চালায়। আমি হলের সবাইকে ভিতরে রাখার চেষ্টা করেছি। ওরা যেভাবে হামলা চালিয়েছে তাতে কয়েকজন মার্ডার হয়ে যেত। এই রকম নৃশংস হামলার বিচার চাই।’
বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত মো: সায়েম বলেন, ‘আমরা চা খেতে হলের সামনে দোকানে যায়। সেখানে নজরুল হলের রায়হানসহ কয়েকজন উপস্থিত হয়। এ সময় রায়হান আমাদের হলের একজনকে মারধর শুরু করেন। আমি তাদের নিবৃত্ত করতে নজরুল হলের সামনে নিয়ে গেলে কয়েকজন জুনিয়র মিলে আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। আমি তবুও তাদের সভাপতিসহ সবাইকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের দিকে ইট মারতে থাকে। এতে অনেকে আহত হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই্।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ‘এ সময় কারা কি করেছে আমি দেখছি। আমি সবাইকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি। এখন হলের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলে অবস্থান করছে। যে ঘটনাটি ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় এজন্য সভাপতির সাথে বসতে হবে এবং সবাইকে নিয়ে সমাধান করতে হবে।’
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের হলে নিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের সংঘর্ষের কথা শুনে আমি হলে আসি। এরপর প্রক্টোরিয়াল টিমকে সাথে নিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে নিয়ে আসি এবং হলের ফটক বন্ধ করে দেই। এখন শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছে। ‘
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি ঘটনা শুনে আমরা ঘটনা স্থলে উপস্থিত হই। এখন শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ অবস্থানে রয়েছে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বসে এটা সমাধান করব।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার নামায পড়তে যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী সেলিম রেজাকে পথ থেকে সরে দাঁড়াতে বলে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল রায়হান। নামায শেষে রায়হানের কাছে বিষয়টি জানতে চায় বঙ্গবন্ধু হলের সেলিম রেজা, রিফাতসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। এ সময় দু’হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং হাতাহাতি হয়।