একমাস হলের বাইরে ঢাবির নির্যাতিত শিক্ষার্থী, উদ্যোগ নেই প্রশাসনের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩০ পিএম, ১০ এপ্রিল,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:০১ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ‘মিনি গেস্টরুমে’ নির্যাতনের শিকার অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০২০ সেশনের শিক্ষার্থী আবু তালিব এক মাসেও হলে উঠতে পারেননি। নিরাপত্তা নিন্ডিত করে হলে ওঠার আবেদন করলেও প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ তার।
গত মাসের ১০ মার্চ হলের ২০১ (ক) নম্বর কক্ষে আবু তালিবকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে একই হলের ২০১৮-১৯ সেশনের চার ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। তারা হলেন, সমাজকল্যাণ বিভাগের শেখ শান্ত আলম, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ইমদাদুল হক বাঁধন, তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয় ও আইন বিভাগের নাহিদুল ইসলাম ফাগুন। তারা সবাই হল ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্তর ছোট ভাই হিসেবে পরিচিত।
পরে এ ঘটনার একদিন পর আবাসিক শিক্ষক ড. মো. আবদুস সোবহান তালুকদারকে (উপল তালুকদার) প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। প্রায় এক মাস পূর্ণ হলেও চার সদস্যের এ কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন আজও আলোর মুখ দেখেনি। বরং সঠিক উপায়ে তদন্ত না করা এবং ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে মিউচুয়াল করে নেয়ার প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
আবু তালিব বলেন, নির্যাতনের পর হল প্রশাসনের কাছে আমি দাবি জানিয়েছি আমাকে বৈধ সিট দিতে হবে এবং নিরাপত্তা নিন্ডিত করতে হবে। তাহলে আমি হলে উঠব এবং হলেই থাকতে চাই। তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের সঙ্গে মিউচুয়াল করার কথা বললেও আমি সেটিতে আপত্তি জানাই। এরপর আমার সঙ্গে আর কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি হল প্রশাসন।
আবু তালিব আরও বলেন, আমি হলে থাকতে চাই তবে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম গেস্টরুম করে নয়। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে বৈধ সিট দিতে হবে। আমার নিরাপত্তা নিন্ডিত করতে হবে।
এক মাসেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেয়ার বিষয়ে কমিটির প্রধান আবাসিক শিক্ষক মো. উপল তালুকদার বলেন, অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তদের বক্তব্যের মধ্যে আমরা মিল পাচ্ছি না। আবার প্রত্যক্ষদর্শীদের সবাইকেও ভালোভাবে রিচ করা যাচ্ছে না। তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্রস চেক করতে একটু সময় লাগছে। গতকাল রাতে আমরা আবার বসব। বসে একটা সিদ্ধান্ত নেব। তারপর দ্রুত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেব।
এদিকে নির্যাতনের ঘটনার পর তালিবের হলে ওঠার বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, সে যদি নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে হলে থাকতে চায় কিংবা উঠতে চায়। সে যেন প্রভোস্টকে জানাই, তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে আমাকে জানায়। সেটি বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
সার্বিক বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসাইন বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনো জমা হয়নি। বিষয়টি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন। আর হলে তুলতে হলে একটা প্রসেস আছে। তার কাছে কোনো হল কার্ড নেই, তাকে বলেছিলাম একটা কার্ড করতে। হল প্রশাসন তো আর নিয়মের বাইরে কিছু করতে পারে না। তার বিষয়টি আমার মাথায় আছে দেখি কি করা যায়।