শিক্ষক হত্যায় বহিষ্কৃত কুয়েটের সেই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩১ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২৭ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। লালন শাহ হলের প্রভোস্ট মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার কুয়েটে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের প্রথম পর্বের (সেমিস্টার) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত চলবে পরীক্ষা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণবিষয়ক পরিচালক ইসমাঈল সাইফুল্লাহ জানান, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, তবে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার থেকে অনলাইনের মাধ্যমে কুয়েটে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা থাকায় সম্প্রতি বহিষ্কারসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদেরও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে। শাস্তি পাওয়া যন্ত্রকৌশল বিভাগের তিনজনসহ গত বৃহস্পতিবার কয়েকজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রভোস্ট সেলিম হোসেন ক্যাম্পাসের কাছের ভাড়া বাসায় মারা যান। এরপর অভিযোগ ওঠে, মৃত্যুর দিন দুপুরে বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তার কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তার ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
গত ২৮ ডিসেম্বর প্রশাসনের কাছে ৯টি সুপারিশসহ ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় ওই কমিটি। এরপর গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে চারজনকে চিরতরে কুয়েট থেকে বহিষ্কার, সাতজনকে দুই শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার, একজনকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার করা হয়। এর বাইরে ২২ শিক্ষার্থীকে এক শিক্ষাবর্ষের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তবে ওই ২২ জনের বহিষ্কারাদেশ আপাতত স্থগিত ছিল। এছাড়া ১০ শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি সাদমান নাহিয়ান ১২ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে বহিষ্কারাদেশসহ সব ধরনের শাস্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে এক রিট আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ১ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদনের শুনানি শেষে তাদের পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সাজা পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কাছে চিঠি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা।
রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার চিঠি পেয়ে আমরা সেই মোতাবেক তা বাস্তবায়ন করেছি। আইনি অন্য কোনো বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান বলেন, তাদের ১২ জনের সবারই কোনো না কোনো পরীক্ষা আছে। কেউ কেউ শুরুর দিন পরীক্ষা দিয়েছেন।