শাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনেই রাত কাটালো অনশনকারী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৪ পিএম, ২০ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪৮ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে অনশনকারী ২৪ শিক্ষার্থী গতকাল বুধবার শীতের সারা রাত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অনশনকারী শিক্ষার্থীরা একই জায়গায় অবস্থান করছিলেন। তাদের সমর্থন ও সাহস জোগাতে আছেন আরও অনেক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থী আন্দোলনের অগ্রভাগে থাকা শিক্ষার্থী মোহাইমেনুল বাশার আজ সকাল ১০টার দিকে বলেন, ‘উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরা অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা সংবাদ সম্মেলন করব। এরপর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল হবে।’
এর আগে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৯ জন ছাত্রী ও ১৫ জন ছাত্র। অনশনে বসা জাহিদুল ইসলাম অপূর্ব বলেন, ‘এ ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।’
বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্যে বাংলা বিভাগের মোজাম্মেল হক এবং সমাজকর্ম বিভাগের দীপান্বিতা বৃষ্টি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাদের মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তারা। পরে অনশনরত শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়লে যেন দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায় এজন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙ্গাতে এসে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করলেই শিক্ষকরা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এ সময় শিক্ষকেরা হ্যান্ডমাইকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কথা বলতে চাইলেও তারা দাবি আদায়ের স্লোগান শুরু করেন।
রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার বিচার হোক। বিনা দোষে যাতে শাস্তি না পান, সে বিষয়টিও মনে রাখা উচিত। এজন্য উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করার প্রয়োজন। তদন্তের মাধ্যমে যার বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলবে, সে যে-ই হোক, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যাপারে আমরা ছাত্রদের সঙ্গে একমত। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এ সুযোগ আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে চেয়েছিলাম।’ পরে শিক্ষকেরা রাত একটার দিকে আন্দোলনস্থল ছেড়ে যান।
আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৩ জানুয়ারি। ওইদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ’ ছাত্রী।
১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওইদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।