রাজাকারের চেতনা যারা ধারণ করে তারাও রাজাকার: ওবায়দুল কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫০ পিএম, ১৫ জুলাই,সোমবার,২০২৪ | আপডেট: ০১:২০ পিএম, ১২ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
রাজাকারের চেতনা যারা ধারণ করে তারাও রাজাকার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার স্পষ্ট করে বলেছে আদালতে বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। আদালতে এটি নিষ্পত্তি হওয়ার পর আদালত যেভাবে নিষ্পত্তি করবে সরকারকে সেভাবে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে, এটি স্পষ্ট।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল (১৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তব্য আন্দোলনের নেপথ্যে নেতা, মতলববাজ, কুশিলবরা স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বিকৃত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সংবাদকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, কোটা সুবিধা মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতিরা পাবে না তো রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে! একথা তিনি যথার্থই বলেছেন।
তিনি বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তস্নাত দেশে রাজাকারের আইন হতে পারে না। দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোনও অপমান বাঙালি জাতি সহ্য করবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতায় পরাজিত অপশক্তির কোনোরকম আস্ফালন আমরা মেনে নেবো না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী বেঁচে থাকতে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত পরাজিত অপশক্তির অপতৎপরতা প্রতিরোধ করা হবে। যে ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের মহান আত্নত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না, নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিতে গৌরববোধ করে, তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে না?
যারা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মূল প্রতিজ্ঞাকে অবজ্ঞা করে তারা কীভাবে মেধাবী হয় প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, তারা কীভাবে জাতি কিংবা ছাত্র সমাজের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে যেকোনও অপশক্তিকে আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবো। এটাই আমাদের অঙ্গীকার।
আন্দোলনের নামে জনজীবনে কোনোরকম দুর্ভোগ মেনে নেবো না মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে কোনও সভা সমাবেশ আমরা মেনে নিতে পারি না। ইতোমধ্যে লক্ষ্য করছি, এই আন্দোলনের কুশিলব জামায়াত-বিএনপিসহ অপশক্তির স্বরূপ উম্মোচিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের অপশক্তির আস্ফালনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দৃষ্টতা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, অবশ্যই দৃষ্টতা। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। এটা অডাসিটি অব হায়েস্ট অর্ডার!
প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে আন্দোলনকারীরা, এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা চরম দৃষ্টতা।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের চলমান আন্দোলন নিয়ে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই মতামত ব্যক্ত করেছেন। যে বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন সেটি আদালত থেকে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারের কিছু করার নেই। বিচারাধীন বিষয়ে মতামত দেওয়া আদালত অবমাননার সামিল। আমরা বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল রাতে আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের অনেকের রাজনৈতিক বক্তব্য ও কুৎসিত স্লোগান শুনেছি। এতদিন আমরা যে আশংকা করেছিলাম, কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নামে তারা আসলে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে যাচ্ছে। এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলের অংশগ্রহণ আছে, সমর্থন তারা প্রকাশ্যেই করছে। আমাদের আশংকা গতকাল রাতে আরও স্পষ্ট।