‘কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী করার চেষ্টা করছে বিএনপি’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৪ পিএম, ১১ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৩:৪৩ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে আন্দোলনের ব্যর্থতা পেছনে রেখে নতুন আন্দোলন শুরুর পাঁয়তারা করছে বিএনপি। বিএনপিসহ কিছু দল আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলন করার চেষ্টা করছে তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্যধারণ করে আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছিলাম। বিষয়টি নিয়ে যখন বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান, তার প্রতি কোনো ধরনের সম্মান না করে আন্দোলনকারীরা বাংলা ব্লকেড নামে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ কিছু দল আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ফাঁদে ফেলে আন্দোলনের ব্যর্থতা পেছনে রেখে নতুন আন্দোলন শুরুর পাঁয়তারা করছে তারা। কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চেষ্টা করছে বিএনপি। ফখরুল বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার দরকার নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি তাদের সম্মান নেই। কোটার বিরোধিতা করে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তার প্রমাণ আবারও দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালে জারি করা সরকারের পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি নিয়োগে এ মুহূর্তে কোনো ধরনের কোটা সংরক্ষিত নেই এবং আপিল বিভাগ শুনানি সাপেক্ষে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি করবে। আমরা গতকাল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধৈর্য সহকারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানিয়েছিলাম। একই সঙ্গে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এ ধরনের সব কর্মসূচি পরিহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বিষয়টি নিয়ে যখন উচ্চ আদালতে বিচারিক প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং এ বিষয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে তার প্রতি কোনো ধরনের শ্রদ্ধাশীল না হয়ে আন্দোলনকারীরা পুনরায় তথাকথিত ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে কর্মসূচি দিয়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
কাদের বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক মহল তাদের রাজনৈতিক স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের প্ররোচনা দিচ্ছে। আমাদের মনে রাখা উচিত, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং সুপ্রিম কোর্ট আমাদের পবিত্র সংবিধানের অভিভাবক ও এই পবিত্র সংবিধানই দেশের সর্বোচ্চ আইন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত যখন সরকার পক্ষ, আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি, মূল মামলা দায়েরকারী পক্ষসহ সবার বক্তব্য শুনে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিচারিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে ঠিক সে মুহূর্তে আন্দোলনের নামে জনগণের চলাফেরা ও যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, কোনো কোনো অশুভ মহল ছাত্র-ছাত্রীদের আবেগকে পুঁজি করে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড রাষ্ট্র বা দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর নয়। আমাদের সবাইকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বল প্রয়োগের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। জন-দুর্ভোগ সৃষ্টির রাজনীতি পরিহার করতে হবে।
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন, কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।