জনগণ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবে : আমান উল্লাহ আমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৮ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ০১:৫৯ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, আগামীতে খেলা অবশ্যই হবে, তবে তা হতে হবে নিরপেক্ষভাবে ও নিরপেক্ষ রেফারির অধীনে। নিরপেক্ষ রেফারি ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে ভাসানী ভবন মিলনায়তনে জাসাস ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে সংগঠনের বাড্ডা, রামপুরা, হাতিরঝিল ও উত্তরা-পূর্ব থানার এক যৌথ কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ আজ দিশাহারা। কিন্তু মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। জনগণের কাছে এই সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কারণ, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত নয়।
তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ হলেও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। তিনিও সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এই সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যখনই মানুষ রাজপথে নেমেছে, প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে-তখনই তারা গুলি চালিয়েছে। এভাবে হত্যা-গুম, নির্যাতন-নিপীড়ন করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায় তারা।
আমান বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- আসল খেলা হবে ডিসেম্বরের নির্বাচনে। আসল খেলা যদি তিনি খেলতে চান, নিরপেক্ষ রেফারি তো লাগবে। রেফারি যদি পক্ষপাতিত্ব করে, সেই খেলা কি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? হবে না। শেখ হাসিনাকে রেফারি রেখে ওবায়দুল কাদেররা খেলতে চান। কিন্তু শেখ হাসিনা তো নিরপেক্ষ রেফারি নন। ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচি পন্ড করতে তারা গুলি চালিয়েছে, গ্রেফতার করেছে, ব্যানার কেড়ে নিয়েছে। এটা কি নিরপেক্ষ রেফারির কাজ? এই রেফারি যদি থাকেন এবং তার অধীনে যদি নির্বাচন হয়, জনগণ আবারো ভোট দিতে পারবে না। আমরা বলব- আগামীতে খেলা অবশ্যই হবে, তবে তা হবে নিরপেক্ষভাবে, নিরপেক্ষ রেফারির অধীনে এবং সেই খেলায় বেগম খালেদা জিয়া জিতবেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নিরপেক্ষ রেফারি ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না। তাই অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। তারাই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তাদের অধীনেই আগামীতে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি
অংশগ্রহণ করবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্ষমতাসীনরা স্বপ্ন দেখছে- শেখ হাসিনার অধীনে তারা ২০১৪ ও ২০১৮-এর মতো আরেকটি নির্বাচন করবে। বিএনপিকে আবারও ছয়টি আসন দিবে। সরকারের সেই স্বপ্ন এবার দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। জনগণ এবার এ ধরনের প্রহসনের কোনো নির্বাচন আর হতে দেবে না। প্রশাসনকে বলব-আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন, আপনাদের ভয় নেই। গুম-খুনের নির্দেশদাতাদেরই বিচার হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আর্দশ ধারণ করে আমরা নেতা-কর্মীরা রাজপথে আছি। ৯ বছর স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র ফিরে এনেছিলেন। সরকার ষড়যন্ত্র করে তাকে কারাবন্দি করে রেখেছেন। দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে ফিরে আসতে যাতে না পরেন তার জন্য মিথ্যা মামলায় সাজানো রায় দিয়েছেন। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশনায়ক তারেক রহমান দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। তার নেতৃত্বেই জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত ও জনগণের সরকার গঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন বলেন, বাড্ডা, রামপুরা, হাতিরঝিল ও উত্তরা পূর্ব থানা জাসাসের নেতৃবৃন্দ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের আর্দশ ধারণ করবে। তারুণ্যের অহংকার দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে, দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরে আনতে এবং ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জাসাস রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিএনপির সহায়ক শক্তি হিসেবে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করবে।
জাসাস ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক শরীফুল ইসলাম স্বপনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনুর সঞ্চালনায় যৌথসভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাসাস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক শামীম মন্ডল, জাবেদ আহমেদ কিসলু, অ্যাড. ফরহাদ হোসেন নিয়ন, জাসাস জেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ হাবিবুর রহমান জসিম, বাবুল তালুকদার, মোঃ মিজানুর রহমান, আহসান হাবিব প্রমুখ।