নির্যাতন যতই বাড়বে, সরকারের বিদায় ততই ত্বরান্বিত হবে : ড. মোশাররফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০২ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:৫০ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়বে, সরকারের বিদায় ঘন্টা ততই ত্বরান্বিত হবে বলে মন্তব্য করে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন।
আজ রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলা সত্ত্বেও গণতন্ত্রকামী জনতা সরকারের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে রাজপথে এসে কর্মসূচি সফল করে প্রমাণ করেছে, এ সরকার জনবিচ্ছিন্ন।
তিনি বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, তেল, আটাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ও সার, ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে গতকাল ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসুচিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। যদিও গত কয়েক দিন বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও গণগ্রেফতার অব্যাহত রেখেছিল। তারপরও দেশব্যাপী প্রায় সকল ইউনিয়নে গতকাল অত্যন্ত সফলভাবে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ ছিল অসাধারণ ও অভূতপূর্ব।
বিএনপির এ নেতা বলেন, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ করতে বর্তমান আওয়ামী সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রাকে বানচাল করতে দলীয় সন্ত্রাসী ও কিছু সংখ্যক পুলিশেকে লেলিয়ে দিয়েছিল। গতকাল দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির পদযাত্রায় আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা ও গুলিবর্ষণ করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, নরসিংদীর পলাশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খানের মিছিল থেকে ব্যানার ছিনিয়ে নিয়েছে। এছাড়া যশোরে ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য অমিতের উপর ডিবি পুলিশ বর্বরচিত হামলা চালিয়েছে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠি পেটা করে পুলিশ। গতকাল পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় ৫০০ শতাধিক নেতাকর্মী আহত করেছেন। প্রায় শতাধিক বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠা ভাঙচুর এবং লুটপাট চালিয়েছে তারা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ২০০ শতাধিক বিএনপি'র নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ড. মোশাররফ বলেন, বিএনপি জনগণের দাবি নিয়ে যখনই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিচ্ছে ঠিক সেই মূহুর্তে একই স্থানে বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসকগোষ্ঠী পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সন্ত্রাসকে উসকে দিয়ে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে চায়।
তিনি আরো বলেন, জনগণের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে পুলিশ পাহারায় শান্তি সমাবেশের নামে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর সকল প্রক্রিয়া চলছে। গতকাল সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের এমপিদের প্রত্যক্ষ নির্দেশে কোথাও কোথাও সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিএনপিসহ নিরীহ জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি, জানমালের উপরে হামলা করেছে।
বিএনপির সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলা সত্ত্বেও গণতন্ত্রকামী জনতা সরকারের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে রাজপথে এসে কর্মসূচি সফল করে প্রমাণ করেছে, এ সরকার জনবিচ্ছিন্ন। যুগে যুগে কোনো অত্যাচারী সরকার জুলুম, নির্যাতন করে টিকে থাকতে পারেনি, এই সরকারও পারবে না। ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়বে, সরকারের বিদায় ঘন্টা ততই ত্বরান্বিত হবে।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এখনো সময় আছে জনগণের ভাষা বুঝে নির্দলীয় নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে সংসদ বাতিল করে পদত্যাগ করুন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরকে বলতে চাই, নিরীহ, নিরাপরাধ জনগণের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন বন্ধ করুন।
গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি জানিয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, এইসকল অপকর্মের সাথে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আওয়ামী নামধারী প্রশাসনের কতিপয় চিহ্নিত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক এমরান সালাহ প্রিন্স প্রমুখ।